দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়টি এখন বাকরখানির দোকানে পরিণত হয়েছে! নারায়ণগঞ্জ শহরের দুই নম্বর রেলগেট এলাকার কার্যালয়টি এতদিন ধরে ভাসমান মানুষ ও পথচারী শিশুদের আশ্রয়ঘর হিসেবে থাকলেও এবার সেখানে বাকরখানির দোকান দেওয়া হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে দোকানটিতে বাকরখানি বানানো ও বিক্রি করতে দেখা যায়। দোকানের মালিক মো. সুমন মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই অফিসটি ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর ছিল। সেই সঙ্গে দিন-রাত নেশাখোরদের আড্ডা ছিল। তাই অফিসের সামনের জায়গাটি পরিষ্কার-পরিছন্ন করে এ দোকান দেওয়া হয়েছে। জাসাসের এক নেতা দোকান বসিয়ে দিয়েছেন। তবে জাসাসের নেতার নাম প্রকাশ করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি।
সরেজমিন বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় পাগল-মাস্তান ও ভবঘুরে নারী-পুরুষরা তাদের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলায় ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছিল জায়গাটি। পরে শহরের ভাসমান মানুষের আনাগোনা বাড়তে থাকে কার্যালয়টিতে। অফিসের দায়িত্বে থাকা মো. সবুজ বলেন, ৫ আগস্টের পর পুরা অফিস তছনছ হয়েছে। এর আগেও ভাঙচুর হয়েছে। ভেতরের যা ছিল সবই চুরি করে নিয়ে গেছে। এখন শহরের ভাসমান মানুষ দিন-রাত অফিসের সামনে ঘুমিয়ে থাকে। আগে অফিসের ভিতরে ঘুমাইত। একসময় অবৈধ কাজকর্মও হতো। পরে কয়েকজন লোক টিন দিয়া আটকিয়ে দেওয়ায় এখন বাইরে ঘুমায়। এবার একটি বাকরখানির দোকান দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার অর্থায়নে দুই তলাবিশিষ্ট কার্যালয়টি কয়েক বছর আগে নতুন ও বড় করে নির্মাণ করা হয়। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী সরকারব্যবস্থা কায়েম করেছিল। ফ্যাসিবাদী সরকারব্যবস্থার সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে একটি শ্রেণি সৃষ্টি করেছিল। সেই শ্রেণিটিই ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। বর্তমানে দলটি জনগণের মাধ্যমে বিতাড়িত হয়ে একটি ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। কাজেই তাদের কার্যালয়টি ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হওয়াটাই স্বাভাবিক।