টিকায় ১ ডলার বিনিয়োগ করলে ২৫ গুণ লাভ পাওয়া যায়। বর্তমানে সরকার ৮৪ ভাগ বিনিয়োগ করে। ২০৩০ সাল থেকে দাতা সংস্থা না থাকলে সরকারকে একাই বিনিয়োগ করতে হবে। শিশুদের বাঁচাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। ‘বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ উদযাপন ২০২৫’ উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে টিকা কার্যক্রমের সাফল্য, উদ্ভাবন, বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ এবং করণীয়’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দেশে ৮১ দশমিক ৫ ভাগ শিশুমৃত্যু কমেছে। এখন ১০টি টিকা দেওয়া হয়, যা ১২টি রোগ প্রতিরোধ করে। আগামী আগস্ট মাস থেকে ১১টি টিকা দেওয়া হবে, যা ১৩টি রোগ প্রতিরোধ করবে। কিন্তু ২০২৯ সালের পর গ্যাভি টিকাদান প্রকল্পে সহায়তা বন্ধ হয়ে গেলে সরকারকে নিজস্ব অর্থায়নে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করতে হবে। নিজাম উদ্দিন বলেন, গত ১২ বছরে ইপিআই কভারেজ ৮৪ ভাগের ওপর ওঠেনি এবং ১৬ ভাগ শিশু টিকা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর এটি হিসাব করলে দেখা যায়, প্রায় ৫-৬ লাখ শিশু টিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। টিকাদানের প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে ৯৮ দশমিক ৮ ভাগ শিশুকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
তবে শহরে টিকা কম নিচ্ছে, গ্রামে বেশি টিকা নিচ্ছে। কারণ শহরে ১২ তলায় টিকা দেওয়া হাওর এলাকায় টিকা দেওয়ার থেকেও বেশি কঠিন। গতানুগতিক পদ্ধতিতে টিকা দিলে অনেক শিশুকে আমরা টিকা থেকে হারাব। মন্ত্রণালয়ের অধীনে শহর ও গ্রামে টিকাদান প্রকল্পে বরাদ্দকৃত জনবলের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ পদ এবং ইপিআই সদর দপ্তরে ৪৩ শতাংশ পদ এখনো শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া বরাদ্দকৃত জনসংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় কম। দুর্গম এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যে সংখ্যায় টিকাদান কেন্দ্র থাকা দরকার, সেই সংখ্যক টিকাদান কেন্দ্র নেই। টিকাদান কর্মসূচি সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য বাজেট বরাদ্দে দেরি হচ্ছে। ফলে টিকা ক্রয়, টিকা পরিবহন ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনা এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন পরিচালিত গবেষণা প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজর অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।