৩ এপ্রিল, ২০২১ ১৬:৪৭

লকডাউন মানতে প্রস্তুত রংপুরের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

লকডাউন মানতে প্রস্তুত রংপুরের মানুষ

সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করছে সরকার। লকডাউন পালনে প্রস্তুতি নিচ্ছেন রংপুরের মানুষ। করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় অনেকেই এই লকডাউনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে নিম্ন আয়ের মানুষ ঋণের কিস্তি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। 

সারা দেশের ন্যায় করোনা পরিস্থিতি রংপুরেও অবনতি হয়েছে। এক থেকে দেড় মাস আগে যেখানে করোনা শনাক্তের হার ছিল শূন্যের কোটায়। সেখানে প্রতিদিন জেলায় করোনা শনাক্ত হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ জন। এদিকে, লকডাউনের ঘোষণা দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোতে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। 

ব্যবসায়ীদের নেতা ও সাধারণ মানুষের জানান, লকডাউনের সিদ্ধান্তটি সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। মানুষ লকডাউন পুরোপুরি মানলে করোনা সংক্রমণের হার কমে যাবে বলে তাদের ধারণা। তবে নিম্ন আয়ের মানুষজন চিন্তিত হয়ে পড়েছে কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কায়। বিভিন্ন এনজিও থেকে যারা ঋণ নিয়েছেন তারাও কিস্তি পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। 

রংপুর নগরীর জিএলরায় রোডের পান দোকানি আব্দুল মালেক, চা দোকানি মোন্নাফ মিয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রমজান আলী ও আব্দুর রহিম জানান, তারা বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। লকডাউন দীর্ঘায়িত হলে কিস্তি কিভাবে পরিশোধ করবেন এনিয়ে তারা চিন্তিত। তবে তারা সকলেই লকডাউনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। 

রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি রেজাউল ইসলাম মিলন বলেন, করোনা সংক্রমণ যে হারে বেড়েছে তাতে লকডাউনের বিকল্প কিছু নেই। সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবমুখি। তিনি বলেন, আমি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে লকডাউন যাতে ব্যবসায়ীরা যথযথভাবে মেনে চলে এই আহ্বান জানাবো।

এদিকে, লকডাউনের ঘোষণায় রংপুরে কামারপাড়াস্থ ঢাকা কোট স্ট্যাণ্ড ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টারে ভিড় বেড়েছে। অনেকই লকডাউনের আগে নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য টিকিট কাটছেন। যাত্রীদের কাছে টিকিটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাড়ি ফিরতে পারবে কিনা এমন সংশয় প্রকাশ করেছেন জোবায়ের আলমসহ কয়েকজন যাত্রী।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানাগেছে, শনিবার পর্যন্ত রংপুর জেলায় ৩৪ হাজার মানুষের দেহের নমুনা পরীক্ষা করে ৪ হাজার ১৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যু বরণ করেছেন ৭৩ জন।  

এদিকে রংপুরে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার দুপুরে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এ অভিযান পরিচালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গোলাম রব্বানী। এসময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধা, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত ছিলেন। 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গোলাম রব্বানী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ১৮টি নির্দেশনা প্রতিপালনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কোন ব্যক্তি যেন মাস্ক ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হয় সেজন্য সচেতন করছি। যারা মাস্ক ছাড়া ঘোরাফেরা করছে তাদের জরিমানা করা হচ্ছে।

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর