১২ জুলাই, ২০২১ ১৮:২৩

শেরপুরে বেড়েই চলেছে সংক্রমণ, জেলা হাসপাতালে ফাঁকা নেই আসন

শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরে বেড়েই চলেছে সংক্রমণ, জেলা হাসপাতালে ফাঁকা নেই আসন

শেরপুর জেলায় বেড়েই চলেছে করনোর সংক্রমণ। জেলার একমাত্র করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে করোনা রোগী রাখার তিল ধারনের জায়গা নেই। প্রচলিত লক ডাউন, স্বাস্থ্যবিধি কোন কিছুই কাজে আসছে না। জেলায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।

 
করোনা পরীক্ষা করতে আসা লম্বা লাইন সামাল দিতে পারছে না জনবল সংকটে থাকা হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগ। সব মিলিয়ে করোন যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। এত সংখ্যক রোগী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। 
শেরপুর জেলা হাসপাতালে করোনা রোগীর জন্য আসন বরাদ্দ আছে ১০০টি। জুলাই শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতিদিন ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ৪/৫ দিন ধরেই রোগীর সংখ্যা শতকের নিচে নামছে না।  

সোমবার (১২ জুলাই) সোমবার পর্যন্ত জেলা হাসপাতালের ১০০ আসনের বিপরীতে রোগী আছেন ১১৬ জন। আরও ভর্তির অপেক্ষায় আছেন অন্তত ২০ জনের মত। প্রতিদিন অক্সিজেন লাগছে ৮০০ কেজি। হাসপাতাল জুড়ে কান্না, আতঙ্ক, হতাশা আর ২৪ ঘণ্টা এ্যাম্বুলেন্সের শব্দ পরিবেশকে ভারী করে তুলছে।  

সূত্র জানায়, জুলাই মাস শুরু হওয়ার পরএ জেলায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। এই মাসের গত ১১ দিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩৭জন। আর ১১ দিনে মারা গেছেন ১২ জন। এই ১২ জনের বাইরে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও ৮জন। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আরও পাঁচ জন। 
গত বছরের ৫ এপ্রিল থেকে চলতি বছরের ৩০ মে পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৯৯ জন। গত জুন মাসেই এই আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭২১ জন। মে মাস পর্যন্ত মারা গেছেন ১৫ জন। আর শুধু জুন মাসে মারা গেছেন ৩১ জন। একই মাসে করোনার লক্ষণ নিয়ে মারা গেছেন আরও ১০ জন।

করোনা শুরুর পর থেকে গত মে মাস পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন মোট এক হাজার ৪৪০জন। আর জুন মাসে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬০০ জন। আর চলতি মাসের গত ১১ দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫১০ জন।

করোনায় শেরপুর জেলায় গত জুন থেকে প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা। জুলায়ে এই সংখ্যা আরও বাড়েছে। পরিসংখ্যান মতে, মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা সদর উপজেলাতে অত্যন্ত বেশি। গত জুন মাসটিকে শেরপুরের মানুষ 'ভয়ংকর জুন' হিসেবে দেখেছে। আর জুলাই শুরু হওয়ার পর থেকে আক্রন্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে চলেছে।

নানা সংকটে এত সংখ্যক লোকের করোনা ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্য বিভাগ হিমসিম খাচ্ছে স্বীকার করে জেলার সিভিল সার্জন একেএম আনওয়ারুর রউফ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে যাচ্ছে। সরকারের কাছে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকসহ লোকবল চাওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থা করে হলেও করোনার রোগীদের চিকিৎসায় দেওয়ার হবে বলে জানিয়েছেন জেলার এই স্বাস্থ্য  বিভাগের এই কর্মকর্তা।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর