২৫ মার্চ, ২০২২ ১২:১৭

পাট চাষ ও পাটের আঁশ উন্নয়নে প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা

অনলাইন ডেস্ক

পাট চাষ ও পাটের আঁশ উন্নয়নে প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা

জনতা জুট মিল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বায়োকেমিষ্ট্রি ও মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের চুক্তি স্বাক্ষর।

পাট বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরি ফসলগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং ভবিষ্যতেও পাটের এই সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে বলে জনতা জুট মিল (আকিজ গ্রুপের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান) বিশ্বাস করে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম ফাইবার ব্যবহার কমানোর দাবিও ক্রমান্বয়ে জোড়ালো হচ্ছে। এতে প্রাকৃতিক আঁশের বাড়তি চাহিদা তৈরীর একটি শক্তিশালী সম্ভাবনা তৈরী হচ্ছে। সর্বোপরি, দেশের রপ্তানী বৈচিত্র বাড়ানোর ক্ষেত্রে পাটের রপ্তানী বাড়ানো ছাড়া আমাদের দেশের খুব কম বিকল্পই আছে। 

এই বিষয়গুলো একত্রে এই ইংগিতই করে যে, আমাদের দেশে পাটের আবাদ এবং ফলন বাড়ানো গেলেই পাটের রপ্তানী বাড়ানোর আরো সুযোগ তেরী হবে। এই সুযোগকে সামনে রেখে, জনতা জুট মিল তার বর্তমান উৎপাদন সক্ষমতাকে কয়েকগুন বাড়ানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। 

পাট জাগের বর্তমান চলমান পদ্ধতিতে সময় উপযোগী এবং সাশ্রয়ী প্রযুক্তি নির্ভর পরিবর্তন আনাই এক্ষেত্রে একমাত্র সমাধান বলে জনতা জুট মিল মনে করে। পাট জাগের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনের প্রযুক্তিগত পদ্ধতি নির্নয় নিয়ে জনতা জুট মিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিষ্ট্রি ও মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগেকে সাথে নিয়ে একটি বৈজ্ঞানিক গবেষনার কাজ শুরু করেছে। 
পাট জাগের প্রযুক্তি নির্ভর নতুন উপায় বের করার পাশাপাশি, পাটের সুতা তৈরীর ক্ষেত্রেও পাটের আঁশের কন্ডিশনিং-এ নতুন পদ্ধতি আবিস্কার নিয়ে কাজ হচ্ছে, যা পাটের সুতার উৎপাদন ও সুতার গুণগত মানে আমুল পরিবর্তনে বিশেষ ভুমিকা রাখবে। পাটের আঁশের কন্ডিশনিং করা একটি অতি জরুরী ধাপ যেখানে পাটের আঁশে এক ধরনের মাইক্রোবায়াল কাজ হয়। এই মাইক্রোবায়াল কাজটি দ্রুত, সহজ ও সাশ্রয়ী এবং সর্বোপরি পাটের আঁশের ইউনিফর্ম কন্ডিশনিং করার চেষ্টার অংশ হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিষ্ট্রি বিভাগ আরোও একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা করছে।

এরই মধ্যে ভালো খবর হলো, বায়োকেমিষ্ট্রি ও মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের পাটের বীজ নিয়ে একটি গবেষনায় নুতন পাটের বীজ উদ্ভাবন করেছেন যেখানে পাটের আঁশের গুণগত মান তুলনামুলকভাবে বর্তমান অন্যান্য পাটের আঁশ থেকে অনেক উন্নত মানের হবে। লিগনিন পাটের এক ধরনের আঠালো উপাদান যা পাটের আঁশের গুণগত মানের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে, এই উপাদানটি যত কম হবে পাটের আঁশ তত বেশি প্লাইএবল হবে অর্থাৎ এই আঁশ দিয়ে অতি উন্নত মানের পাটের সুতা হবে। লিগনিন পাটের আঁশ বা সেলোলুজকে একে অপরের সাথে বেধে রাখার কাজটির করে, যা পাটের জাগের সময়ে আংশিক রিমুভ হয়।সাধারণত, পাটে প্রায় ১২% এর মত লিগনিন থাকে, এর পরিমান যত কমানো যাবে পাটের আঁশের ব্যবহার ততই নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া এবং নতুন ক্ষেত্রে পাটের আঁশের প্রবেশের পথ তৈরীর সুযোগ হবে।

দেশের পাট উৎপাদন ও উন্নয়নের স্বার্থে এই উদ্যোগটি নিয়েছে আকিজ গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান জনতা জুট মিলস্ লিঃ। ২৩ মার্চ এই বিষয়ে জনতা জুট মিলস্ লিঃ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিষ্ট্রি ও মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের মধ্যে একটি চুক্তি সাক্ষর হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আকতারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিষ্ট্রি ও মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপকবৃন্দ, আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ বশির উদ্দিন ও আকিজ গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর