শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৩ ০০:০০ টা
ভাঙন

হুমকির মুখে চৌহালী উপজেলা পরিষদ ও থানা

সাতক্ষীরা উপকূলে বেড়িবাঁধে ধস

হুমকির মুখে চৌহালী উপজেলা পরিষদ ও থানা
যমুনার ভাঙনে হুমকির মুখে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা পরিষদ ও থানা। অন্যদিকে সাতক্ষীরায় নদ-নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন বেড়িবাঁধে মারাত্দক ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর_ সিরাজগঞ্জ : যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিরাজগঞ্জের উজানে ও ভাটিতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। উজানে সদর উপজেলার পাঁচটিকুরী থেকে কাজিপুর উপজেলার মাইজবাড়ী, যমুনা-তীরবর্তী ইটালী, পাঁচঠাকুরী, বালিগুগরী, বাহুকা, খুদবান্দি, মাইজবাড়ী, পলাশপুর, পলাশতলী, মেঘাই, নতুন মেঘাই, খুদবান্দি, মাছুয়াকান্দি, সিংড়াবাড়ী, বুরুঙ্গী, পাটাগ্রাম, বাঐখোলা, শুভগাছা, ঘাটি শুভগাছা, মেয়াখোলা ও আফনিয়ার প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙন রোধে নির্মিত দুটি স্পারের মাটির স্যাংকও ধসে গেছে। গত এক সপ্তাহে এসব এলাকার প্রায় পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ও সহস াধিক একর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এদিকে, ভাটিতে চৌহালী উপজেলা রক্ষাবাঁধের উজানে ১০ মিটার অংশজুড়ে ভাঙন শুরু হওয়ায় উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ থানা ভবন হুমকির মুখে পড়েছে। ভাঙন রোধে সিমলা থেকে বাহুকা পর্যন্ত প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে মাঝপথে থেমে যাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষ নদী ভাঙনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইটালী গ্রামে নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তারিন এন্টারপ্রাইজের শ্রমিকরা তীর সংরক্ষণের জন্য তৈরি সিসি ব্লকগুলো পানিতে নিক্ষেপ না করে তা সরিয়ে নিচ্ছেন। তারিনের সুপারভাইজার সাইফুল ইসলাম জানান, কাজের বিল নিয়ে ঠিকাদার ও পাউবো কর্মকর্তাদের ঠেলাঠেলির কারণে কাজগুলো সম্পন্ন হচ্ছে না। এর খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সাতক্ষীরা : নদ-নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন বেড়িবাঁধে মারাত্দক ভাঙন দেখা দিয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। এদিকে দেবহাটার সীমান্তে ইছামতী নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে ওই এলাকার ১০টি গ্রাম। শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদুল ইসলাম জানান, ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তিনটি পয়েন্ট ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। পশ্চিম পাতাখালী ও ঝাপার মধ্যবর্তী স্থান, পূর্ব পাতাখালী বাজারের উত্তর পাশ এবং কামালকাঠি প্রাইমারি স্কুলের দক্ষিণ পাশে বেড়িবাঁধের অবস্থা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে মাটির বস্তা ফেলে, বাঁশ দিয়ে ওইসব এলাকার বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চলছে। এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটন জানান, খোলপেটয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে স্থানীয় বিছট গ্রামের গাজী বাড়ির সামনে পাউবোর বেড়িবাঁধে মারাত্দক ভাঙন দেখা দিয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে বাঁধটি ভেঙে ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। একই অবস্থা বাগালী এলাকায়। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, তাদের আওতাধীন কমপক্ষে ৩০টি স্থানে বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানানো হলেও কোনো অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় বাঁধগুলো মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর