শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৩ ০০:০০ টা
জামালপুরে উদ্বোধনের আগেই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফাটল

ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল মাদ্রাসা ভবন

খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

ফরিদপুর, মৌলভীবাজার, রংপুরের বদরগঞ্জ, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ এবং দিনাজপুর, ঝালকাঠিতে কয়েকটি স্কুল ও মাদ্রাসা ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় এসব প্রতিষ্ঠানে খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। জামালপুরে তিন তলাবিশিষ্ট একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উদ্বোধনের আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর_ ফরিদপুর : মধুখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে ফাটল দেখা দেওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ফলে স্কুলটির সহস্রাধিক শিক্ষার্থী মাঠে সামিয়ানা টাঙিয়ে ক্লাস করছে। কত দিন এভাবে ক্লাস চলবে বলতে পারছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। এদিকে খোলা মাঠে ক্লাস নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জেল হোসেন জানান, স্কুল ভবনটির অবস্থ খুব নাজুক। যে কোনো সময় ধস আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা ভবনে ক্লাস করতে চাইছে না। জামালপুর : উদ্বোধনের আগেই অসংখ্য ফাটল দেখা দিয়েছে জামালপুরের তিন তলা একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ভবনে। দেবে গেছে ভবনের নিচ তলার মেঝেও। ভবনটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জামালপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্র জানায়, ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে শহরতলির চন্দ্রা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তিন তলা ভবনটি নির্মাণের জন্য ২০০৯ সালের আগস্টে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আর আর এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এক বছরের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার কথা থাকলেও ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় এক প্রভাবশালী ঠিকাদারের কাছে কাজ বিক্রি করে দেয়। ওই ঠিকাদার কাজ শেষ করে ২০১১ সালের ২৯ মে স্বাস্থ্য বিভাগকে ভবনটি বুঝিয়ে দেয়। এর পর থেকে ভবনটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিল। সাভার ট্র্যাজেডির পর এলাকাবাসীর নজরে পড়ে এই ভবনে ভয়াবহ ফাটল। জামালপুরের সিভিল সার্জন নারায়ণ চন্দ্র দে জানান, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এতদিন উদ্বোধন করা হয়নি। মৌলভীবাজার : কমলগঞ্জে ভাণ্ডারীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় ও রাজনগরে দেবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে ফাটল দেখা দেওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এর ফলে দুটি বিদ্যালয়ে খোলা আকাশের নিচে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। জেলা শিক্ষা অফিসার জানান, কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে তাকে অবহিত করার জন্য বলেছেন। রাজনগর উপজেলা প্রকৌশলী মো. রুবাইয়াত জামান জানান, দেবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বদরগঞ্জ (রংপুর) : উপজেলার কাঁচাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ভবন জরাজীর্ণ হয়ে দেড় বছর ধরে শিক্ষার্থীরা খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে। কিন্তু বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় বাইরে ক্লাস করা সম্ভব হচ্ছে না। ঝুঁকি নিয়ে ওই ভবনের বারান্দায় পাঠদান করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া না হলে যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : সুন্দরগঞ্জের ভাটির চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ কক্ষের একপাশ দেবে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করছেন শিক্ষকরা। যে কোনো মুহূর্তে ভবন ধসে প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে শিক্ষার্থীরা জানায়। উপজেলা প্রকৌশলী ও শিক্ষা অফিসার জানান, জমিস্বল্পতার কারণে ওই স্থানে নতুন ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না। ঝালকাঠি : সদর উপজেলার বৈদারাপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান। খসে পড়ছে ভবনের প্লাস্টার। সন্তানদের মাদ্রাসায় পাঠিয়ে অভিভাবকরা থাকেন উৎকণ্ঠায়। মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম বলে, 'ভয়ে ভয়ে আমরা ক্লাস করি। মাঝেমধ্যে দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ে আমাদের ওপর।' দিনাজপুর : কালবৈশাখীর তাণ্ডবে সম্প্রতি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে চিরিরবন্দরের বর্ণমালা কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড হাইস্কুল। শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে খোলা আকাশের নিচে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন জানান, ঝড়ে বিদ্যালয়টির টিনের চালা উড়ে গেছে। এভাবে ক্লাস নিতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

সর্বশেষ খবর