সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

সাপের সঙ্গে বসবাস

সাপের সঙ্গে বসবাস

উপজেলা শহর থেকে মাইল দশেকের পথ। প্রত্যন্ত এক নিভৃত দরিদ্র পল্লী। অভাবী জনপদ। লম্বালম্বি গ্রামটিতে সবই মাটির কুঁড়েঘর। যাকে গোটা এলাকায় এক নামে জানে_ সাপের গ্রাম। ভাবতেই যেন গা ছমছম করে ওঠে। ভয়ে কেউ এ গ্রামে ঢুকতে সাহস করে না। ঘরে ঘরে সাপের সঙ্গে নারী পুরুষের সহাবস্থান। কাঠের বাঙ্ বন্দী নানা জাতের সাপ। গোখরা, মাছুয়াআলাত, দুধরাজ, লাউডগা, ও দারাজ নামের কত বিষাক্ত সাপ। আরও কত জাতের বিষধর সাপ আছে কাঠের বাঙ্ েতার হিসাব মেলা ভার। গ্রামের মানুষ সাপের সঙ্গেই বসবাস করে অভ্যস্ত।

সাপের গ্রামটির অবস্থান রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমে রামনাথপুর ইউনিয়নের খোর্দবাগবাড় মিশনপাড়ায়। কিন্তু গোটা তল্লাটে সাপের গ্রাম নামে পরিচিত। আদিবাসী সম্প্রদায় হলেও এরা সবাই অভাবের তাড়নায় ধর্মান্তরিত খ্রিস্টান। প্রায় ২৫০ বছর ধরে বাপ দাদার এ পেশাকে অাঁকড়ে ধরে আছে ৪৮টি পরিবারের ২৫০ জন।

সরেজমিনে দেখা যায়, হতশ্রী এ পল্লীর মানুষ পেশায় সবাই সাপ ধরার সঙ্গে জড়িত। অন্য পেশার সঙ্গে এরা নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে সাপ ধরে এরা জীবিকা নির্বাহ করে বেঁচে আছে। এ কারণে অভাব এদের নিত্যসঙ্গী। সাপের বংশ দিনদিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ফলে পর্যাপ্ত সাপ না পেয়ে বিক্রি করতে পারে না। কিন্তু এ পেশাও ছেড়ে দিতে নারাজ তারা। তবে কেউ কেউ উপায় অন্তর না পেয়ে দিনমজুরের কাজ শুরু করেছে। আগের মতো খুব একটা সাপ পাওয়া যায় না। ফলে ঘরেই বসে থাকতে হয়। হঠাৎ করে কোথাও থেকে সাপ ধরার ডাক আসলে এরা ছুটে যান। চুক্তির বিনিময়ে এরা সাপ ধরে আনেন। বিনিময়ে পান কিছু নগদ অর্থ। এভাবেই চলছে পরিবার-পরিজন নিয়ে এদের সংসার।

 

 

সর্বশেষ খবর