রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৩ ০০:০০ টা

কেরানীগঞ্জে অর্ধশতাধিক ক্লিনিকে প্রতারিত রোগী

ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে বেসরকারি ক্লিনিক ও রোগনির্ণয় কেন্দ্র। এসব ক্লিনিকে বেশির ভাগ সময়েই চিকিৎসক থাকেন না। নেই প্রশিক্ষিত সেবিকা ও প্যাথলজিস্ট। ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় এসব ক্লিনিকে রোগী মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে রোগনির্ণয় কেন্দ্রগুলোতে রক্ত, মলমূত্রসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করছেন অদক্ষ কর্মীরা। ফলে রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষায় ভুল স্বাস্থ্যতথ্য পাওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। কেরানীগঞ্জ উপজেলায় ৪টি সরকারি হাসপাতাল থাকলেও ৩টিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা নেই। এ সুযোগে অতি মুনাফালোভীরা যত্রতত্র অর্ধশতাধিক অবৈধ ক্লিনিক গড়ে তুলেছেন। বিখ্যাত ডাক্তারদের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চিকিৎসার নামে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় খেয়াল খুশিমতো ক্লিনিক ব্যবসা চলছে। সঠিক রোগ নির্ণয় ও সুচিকিৎসার পরিবর্তে প্রতিনিয়ত রোগীরা প্রতারিত হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শহীদুল ইসলাম জানান, কেরানীগঞ্জে অর্ধশতাধিক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই অনুমোদনহীন। যাদের অনুমোদন আছে এদের বিরুদ্ধেও শর্ত ভঙ্গের নানা অভিযোগ আছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও নার্সিং হোম স্থাপনের জন্য ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট, ইনকাম ট্যাঙ্ ছাড়পত্র, প্রতিষ্ঠানের শয্যাসংখ্যা, জরুরি বিভাগ, ওটি, ওয়াশরুম, লেবার রুম, অপেক্ষা কক্ষ, অফিস কক্ষ, প্রশস্ত সিঁড়ি, জেনারেটর, পোস্ট অপারেটিভ রুম, ইনস্টুমেন্ট রুম, অভ্যর্থনা রুম, ড্রেসিং রুম, নার্সদের ডিউটি কক্ষ, ডাক্তার কক্ষ, যন্ত্রপাতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা, সার্বক্ষণিক ডাক্তার নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের নাম, ঠিকানা, যোগ্যতার সনদপত্র, নিয়োগপত্র, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও অ্যাম্বুলেন্স থাকতে হবে। পাশাপাশি বেসরকারি ক্লিনিক খুলতে ১০ বেডের বিপরীতে ৩ জন ডাক্তার, ৬ জন নার্স, ১০ জন সুইপার, মানসম্মত পরিবেশ ও অবকাঠামোর শর্ত পূরণ করতে হবে। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ক্ষেত্রে প্রতি ৩ জনে একজন ডিপ্লোমা নার্স, ২ জন এইড নার্স বাধ্যতামূলক। এসব শর্ত পূরণের পর তদন্ত শেষে ক্লিনিক পরিচালনার অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। এসব শর্তের ধারে কাছেও নেই কেরানীগঞ্জের অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সরেজমিন ক্লিনিকগুলো ঘুরে এসবের কিছুই পাওয়া যায়নি। ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর চিকিৎসাসেবা ও পরীক্ষার মান নিয়মিত মনিটর করা যাচ্ছে না। তিনি জানান, অনুমোদনহীন ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে শীঘ্রই আমরা অভিযান চালাব।
 

সর্বশেষ খবর