শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৩ ০০:০০ টা

ঢাকা-লাকসাম কর্ড লাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি ৪৩ বছরেও

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম দূরত্ব কমবে ১১০ কি.মি.

ঢাকা-লাকসাম কর্ড লাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি ৪৩ বছরেও

কুমিল্লার লাকসাম থেকে ঢাকা রেল কর্ড লাইন প্রকল্পটি দীর্ঘ ৪৩ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের রেল যোগাযোগ সংক্ষিপ্ত করার জন্য ১৯৬৯ সালে লাকসাম-ঢাকা কর্ড লাইন নির্মাণে পরিকল্পনা ও জরিপ সম্পন্ন হয়। এতে দেখা যায়, লাকসাম থেকে ১১০ কি.মি. রেললাইন নির্মাণ করা হলে ঢাকা-চট্টগ্রামের দূরত্ব ১১০ কি.মি. কমে যাবে। লাকসাম থেকে বর্তমানে রেলওয়ে অবকাঠামোতে কুমিল্লা, কসবা, আখাউড়া, বি-বাড়িয়া, আশুগঞ্জ, ভৈরব, নরসিংদী ও টঙ্গী হয়ে বৃত্তাকার পথে ঘুরে ঢাকা পেঁৗছতে সময় লাগে ৭-৮ ঘণ্টা। লাকসাম-ঢাকা ১১০ কি.মি. রেললাইন নির্মিত হলে চট্টগ্রাম থেকে বর্তমান গতিতে রেল চললেও সর্বোচ্চ সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা। বর্তমানে চট্টগ্রাম-ঢাকার দূরত্ব ৩২৪ কি.মি. থেকে কমে হবে ২১৪ কি.মি.। রেলওয়ের একটি সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৯ সালে এটি নির্মাণের পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন হয়নি স্বাধীনতা যুদ্ধ ও অন্যান্য কারণে। পরবর্তীতে ১৯৭৫-৭৬ সালে আবারও এ পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের বিস্তারিত ট্রাফিক জরিপ করে চূড়ান্ত রিপোর্ট যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। জরিপে লাকসাম-ঢাকা কর্ড লাইনের প্রস্তাবনায় বিজরা, বরুড়া, আরিফপুর, চান্দিনা, মুরাদনগর, হোমনা, বাঞ্ছারামপুর, রূপগঞ্জ, ডেমরা ইত্যাদি এলাকা দিয়ে রেললাইন করার প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া আরও একটি বিকল্প প্রস্তাবে বলা হয়, রেলপথটি হোমনা বাঞ্ছারামপুর দিয়ে না গিয়ে কচুয়া, ষাটনল, গজারিয়া, মদনগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত নির্মাণ করলে আরও ২০ কি.মি. কম অর্থাৎ ৯০ কি.মি. লাকসাম-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ করলেই চলবে। ৬৯ সালের জরিপে ৩টি বড় ও মাঝারি রেল সেতুসহ ১১০ কি.মি. রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিভিন্ন স্টেশন ও কর্মচারীদের বাসস্থান অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৭৫-৭৬ সালের জরিপের পর ৬.৩ ভাগ ব্যয় বৃদ্ধি ধরে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়। ১৯৯৮-৯৯ সালে রেল পুনঃগঠন সংস্কার প্রণয়নে গঠিত কমিটি একটি সুপারিশ পেশ করে। এতে লাকসাম-ঢাকা কর্ড লাইন নির্মাণে ৯০০ কোটি টাকার প্রয়োজনীয়তার কথা প্রস্তাব করে। প্রস্তাবিত লাকসাম-ঢাকা কর্ড রেললাইন স্থাপিত হলে সমগ্র নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুরসহ দাউদকান্দি, হোমনা, সোনারগাঁও, ডেমরাসহ এক বৃহৎ জনগোষ্ঠী রেলপথের আওতায় আসবে এবং যাতায়াতে আসবে স্বাচ্ছন্দ্য।

বাংলাদেশ রেল এপ্লয়িজ লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম পাটোয়ারী বলেন, লাকসাম-ঢাকা কর্ড লাইন প্রকল্পের বাস্তবায়ন সময়ের দাবি। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে যাত্রীরা আরও অনেক বেশি সুবিধা পেত। তবে প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে পূর্বাঞ্চলে কোনো তথ্য নেই। রেলওয়ে মহাপরিচালক মো. আবু তাহেরের বক্তব্য নিতে তার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

 

 

সর্বশেষ খবর