রবিবার, ২২ জুন, ২০১৪ ০০:০০ টা

পার্বত্যাঞ্চলে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, হারিয়ে গেছে জীব-বৈচিত্র্য

পার্বত্যাঞ্চলে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, হারিয়ে গেছে জীব-বৈচিত্র্য

একসময়ের বনজ সম্পদে ভরপুর পার্বত্যাঞ্চল এখন বিরানভূমি। পাহাড়ে অপরিকল্পিত জুম চাষ আর নির্বিচার বৃক্ষনিধনের ফলে উজাড় হয়ে গেছে একের পর এক বন। অসাধু চক্রের দৌরাত্দ্যে পাচার হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার কাঠ। বনশূন্য হয়ে পড়ায় হারিয়ে গেছে পার্বত্যাঞ্চলের জীববৈচিত্র্য।

জানা গেছে, পার্বত্যাঞ্চলে প্রাকৃতিক বন ছাড়াও কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিশাল এলাকাজুড়ে সৃজন করা হয়েছিল সরকারি বনবাগান ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল। অনিয়ন্ত্রিত বন ব্যবস্থাপনা এবং অবাধে বৃক্ষনিধনের ফলে লুণ্ঠিত হয়েছে সেসব বনজ সম্পদ। ফলে এককালের সবুজঘেরা পাহাড়ি বনানী বর্তমানে বৃক্ষশূন্য। রাঙামাটির বিস্তৃত বনাঞ্চল এককালে বন্যপ্রাণীর দ্বিতীয় বৃহত্তর আধার হিসেবে বিবেচিত হতো। ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীতে সমৃদ্ধ ছিল পাহাড়ি অঞ্চল। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি অঞ্চলে প্রায় ৭৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৭ প্রজাতির উভয়চর প্রাণী, ১০০ প্রজাতির পাখি ও ২৫ প্রজাতির সরীসৃপ ছিল। কালের আবর্তের সঙ্গে অপরিকল্পিত জুম চাষ ও নির্বিচার বৃক্ষনিধনের ফলে বন্যপ্রাণীদের নিরাপদ আবাসস্থল ক্রমে ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে দ্রুত হ্রাস পেয়েছে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা। বিশেষ করে মায়াহরিণ, হাতি, বন্যশূকর, বনছাগল এখন একেবারেই দেখা যায় না। একই সঙ্গে বনজ সম্পদ পাচারের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে এ অঞ্চলের গর্জন, সিভিক, চন্দুল চম্পা, নারিকেলি, তেলসুর, তালি, পিটরজ, শিমুল, তুন, ভাদি, জারুল, কদম, পিটালী, বান্দরহোলা, আমড়া, আমলকী, চিকরাশিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। বন বিভাগের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম সার্কেলের সাতটি এবং রাঙামাটির ছয়টি বন বিভাগে ৭ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর বনাঞ্চল রয়েছে। এর মধ্যে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পরিমাণ ৬ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর। এ বিশাল বনভূমি রক্ষার দায়িত্বে আছে মাত্র ১ হাজার ৪০০ প্রহরী। পর্যাপ্ত জনবল ও অবকাঠামো না থাকায় বনদস্যুদের প্রতিনিয়ত হানায় বনসহ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে পার্বত্যাঞ্চলের জীববৈচিত্র্য।

 

 

 

সর্বশেষ খবর