শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

কষ্টে আছেন মোন্নাফ ও তার পরিবার

জাপানি নাগরিক হত্যা

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

অতি কষ্টে দিন কাটছে হোশি কোনিওকে আনা-নেওয়া করা রিকশাচালক মোন্নাফ আলীর পরিবারের। মোন্নাফের উপার্জন দিয়ে চলত ৫ সদস্যের সংসার। এক মাসের বেশি সময় ধরে পুলিশ হেফাজতে থাকায় তার অসুস্থ স্ত্রী চিকিৎসা করাতে পারছেন না। অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। তবে দুই দিন কাজ করলে সপ্তাহের বাকি ৫ দিন অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকতে হয়। সংসার চালাতে গিয়ে মোন্নাফের বৃদ্ধা মা ভিক্ষায় নেমেছেন। তবে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু  সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মোন্নাফের পরিবার সহায়তা নয়, স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানায়। গতকাল দুপুরে মোন্নাফের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট দুটি দোচালা টিনের ঘর। রংপুর সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাটবাড়ি এলাকায় রেল লাইনের ধারে বাড়ি। জায়গাটাও রেলওয়ের। দুই ছেলে-মেয়ে মোন্নাফের। বড় ছেলে আবদুর রহিম বাবু (১৬) শারীরিক প্রতিবন্ধী। ছোট মেয়ে মোহনার বয়স ৬ বছর। একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে গত বছর ঘর দুটি তুলেছেন। বাড়িতে একটি নলকূপ বসিয়েছেন। আয় না থাকায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না বলে জানান মোন্নাফের স্ত্রী রেখা বেগম (২৫)। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যক্ষা ও লিভারে সমস্যাজনিত রোগে ভুগছেন। সপ্তাহে ১৭০ টাকার ওষুধ লাগে। আগে মোন্নাফ রিকশা চালিয়ে ওষুধ আনতেন। মোন্নাফ না থাকায় ওষুধ কিনতে না পেরে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। মোন্নাফের মা কোথায় জানতে চাইলে, কান্নায় ভেঙে পড়েন রেখা। জানালেন, সংসারের অনটন দেখে শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম (৭০) ভিক্ষা করতে বেরিয়েছেন। মোন্নাফের মেয়ে মোহনা বলে, ‘বাবাকে চাই। আর কিছু চাই না। আমার বাবাকে আনি দেন’।

সর্বশেষ খবর