সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পঞ্চগড়ে মহামারী আকার ধারণ করেছে ক্ষুরারোগ

পৌর এলাকায় এক মাসে মারা গেছে শতাধিক গরু

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ে মহামারী আকার ধারণ করেছে গরুর ক্ষুরারোগ। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক মাসে জেলায় কয়েকশ গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র পৌর এলাকায়ই এ সময় মারা গেছে শতাধিক গরু। জটিল এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে খামার ও কৃষকের গোয়ালঘরে। ভারত থেকে অবৈধ পথে রোগাক্রান্ত গরু আসাই এ রোগের কারণ বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। খামারে পালিত বিদেশি জাতের গরু মারা যাচ্ছে বেশি। আক্রান্ত গরু অর্ধেক দামেও বিক্রি করা যাচ্ছে না। ফলে পথে বসার উপক্রম হয়েছে খামারিদের। চিকিৎসার জন্য বহু টাকা খরচ করেও গরু সুস্থ না হওয়ায় নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন। মাংস ব্যবসায়ীরা আক্রান্ত এ গরু জবাই করে বাজারে বিক্রি করায় জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। খামারিরা জানান, আক্রান্ত গরুর শুরুতে মুখ দিয়ে লালা ঝরে, মুখ ফুলে যায়। ক্ষুরারোগে আক্রান্ত হওয়ার পর গরুগুলো চিবিয়ে কিছু খেতে পারে না। এ ব্যাপারে পঞ্চগড় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আকতারুজ্জামান বলেন, আমরা আক্রান্ত গরু সুস্থ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছি। এখনো মহামারি আকারে না ছড়ালেও এর সম্ভাবনা মাথায় রেখে ভাইরাস চিহ্নিত করার জন্য ঢাকা কেন্দীয় পশু রোগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং জয়পুরহাট পশু রোগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে চারজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাঠে কাজ করছেন। আক্রান্ত হওয়ার আগেই ক্ষুরারোগের ভ্যাকসিন দিতে হয়। জানা গেছে, করিডোর দিয়ে ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হলেও পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে এখনো দেদারছে আসছে ভারতীয় গরু। এ সবের বেশির ভাগই রোগাক্রান্ত। এ গরু খামারে রাখায় সুস্থ গরুও জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পঞ্চগড় পৌর এলাকার নিবন্ধিত খামারের শতাধিক গরু ইতোমধ্যে মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে আরো কয়েকশ। গত এক সপ্তাহে শহরের জালাশী এলাকার রাসেলের একটি, তুলারডাঙ্গার জয়নালের তিনটি, কামাতপাড়ার মোস্তাফিজুরের আটটি, একরামুলের তিনটি গরু মারা গেছে। তারা জানান, লোন নিয়ে গরুর খামার করেছিলাম। একের পর এক গুরু মারা যাওয়ায় এখন পথে বসার অবস্থা হয়েছে। অনেকের অভিযোগ, গবাদি পশুর ভ্যাকসিনের সরকারি মূল্য ১০ টাকা হলেও কৃষকের কাছ থেকে ২০ টাকা করে নিচ্ছেন উপজেলা ভেটেনারি সার্জন এবং স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসকরা। খামারি মোস্তাফিজুর বলেন ‘কয়েকটি গরু মারা যাওয়ার পর বাকিগুলোও আক্রান্ত হওয়ায় নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিয়েছি। অসুস্থ গরুর চিকিৎসা করাতে গত তিন মাসে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এখন ব্যাংক ঋণ কিভাবে পরিশোধ করব তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি। একরামুল জানান, তার খামারে ২০টি বিদেশি জাতের গাভী ছিল। গত ২০ দিনে তিনটি গাভী ও একটি বাছুর মারা গেছে। খামারে এখন রয়েছে মাত্র দুটি গাভী।

সর্বশেষ খবর