মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সড়কে বাঁশের বেড়া গ্রামবাসী অবরুদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার একটি গ্রামের নাম সাতাইন। হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক পরিবারের বসবাস এই গ্রামটিতে। চলাচলের মাত্র একটি কাঁচা সড়ক। গত চার দিন ধরে সে সড়কটি বন্ধ। বাঁশের বেড়া দিয়ে সড়কটি বন্ধ করে রেখেছেন পাশের গ্রামের প্রভাবশালীরা। ফলে অবরুদ্ধ রয়েছেন সংখ্যালঘু এই গ্রামবাসী। এদিকে প্রভাবশালীদের অব্যাহত হুমকি-ধমকির মুখে আইনি সহায়তা নিতে কোথাও যেতেও পারছেন না। এ অবস্থায় চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন গ্রামটির শতাধিক সংখ্যালঘু পরিবার। জানা যায়, শেরপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে সাতাইন গ্রাম। স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এই গ্রামটিতে তেমন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যোগাযোগ ব্যবস্থাও বেহাল। একমাত্র সড়কটি ব্যবহার করে এই গ্রামের মানুষ উপজেলা শহরে যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু গত শুক্রবার (২০ নভেম্বর) পাশের গ্রামের প্রভাবশালী শাফিউল করিম ওরফে শাফি ও তার সহযোগীরা মানুষের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত সরকারি এই সড়কটির প্রবেশ পথে বাঁশের বেড়া দিয়ে রেখেছেন। ফলে গ্রামবাসী চলাচল করতে পারছেন না। তিন দিন ধরে তারা অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। গ্রামটির বাসিন্দা ফটিক চন্দ্র প্রামাণিক জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে সাতাইন গ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সরকারি খাস ছয় শতক জায়গায় একটি কালীমন্দির নির্মাণ করেন। এরপর থেকে গ্রামের লোকজন সেখানে প্রতিবছর পূজা অর্চনা করে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী আয়রা গ্রামের জয়েন উদ্দিনের ছেলে শাফিউল করিম ওরফে শাফি এই মন্দিরের জায়গার দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। শাফিউল করিম শাফি জানান, তিনি কোনো সরকারি সড়কে বাঁশের বেড়া দেননি। সামাজিক বিরোধের কারণে সাতাইন গ্রামের লোকজনই তার জায়গায় বাঁশের বেড়া দিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এদিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার বেলাল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের সঙ্গে মন্দিরের জায়গা ও পূজা করা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই সড়কটিতে বাঁশের বেড়া দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মো. এরফান জানান, এ ধরনের কোনো খবর তার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম সরোয়ার জাহান জানান, মানুষ চলাচল করে-এমন কোনো সড়ক বন্ধ করে দেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। খোঁজখবর নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর