‘জম্নভূমি ছাড়িয়া গেলাম। জানি না, ওখানে জম্নভূমির মতো মাতৃছায়া পাবো কি-না। হামার জন্য আশীর্বাদ চাই। হামার সবাক ক্ষমা করে দেবেন। হে ভগবান! তোমার কাছে প্রণাম করিতেছি, তুমি বঙ্গজননীর সবাক ভালো রাখিও।’ পাটগ্রাম উপজেলার বিলুপ্ত বাঁশকাটা ছিটমহলের বর্মণপাড়ার ষাটোর্ধ্ব উকল চন্দ্র এসব কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। গতকাল জম্নভিটা ছেড়ে ভারত যাওয়ার প্রাক্কালে এসব বলে বিলাপ করেন তিনি। নিজ জম্নভিটা ও প্রতিবেশীদের মায়াজাল ছিন্ন করে গতকাল উকলের মতো ভারতে যান এ উপজেলার বিলুপ্ত চারটি ছিটের ১৩০ ট্রাভেলপাসধারী। তাদের বিদায়ের সময় তৈরি হয় আবেগঘন পরিবেশ। দুপুরে বুড়িমারী স্থলবন্দরে পুলিশ ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষে ভারত যাওয়া এসব নাগরিককে মিষ্টিমুখ করান পাটগ্রামের ইউএনও নূর কুতুবুল আলম। অন্যদিকে ভারতের কোচবিহার অতিরিক্ত জেলা শাসক আয়শা রানী ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সচিব রামাকান্ত গুপ্তা ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণকারীদের হাতে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এদিকে পঞ্চগড় দেবীগঞ্জের বিলুপ্ত কোটভাজনী ও বালাপাড়া ছিটের ১৪৭ জন গতকাল স্থায়ীভাবে ভারতে গেছেন। চিলাহাটির ডাঙ্গাপাড়ায় আবদুর রউফ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুরে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকালে হলদিবাড়ী সীমান্ত দিয়ে ভারত প্রবেশ করেন। এর আগে রবিবার বিকালে প্রয়োজনীয় মালামালসহ তাদের গাজোকাঠি বাজার এলাকায় স্থাপিত চেকিং ও লোডিং পয়েন্টে আনা হয়। কাস্টমস ও বিজিবি কর্তৃপক্ষের চেকিং কার্যক্রমের পর সেখানে রাতযাপনের ব্যবস্থা করা হয় তাদের। এ নিয়ে পঞ্চগড় থেকে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ভারতে গেলেন ১৯৫ জন।