রবিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আমনের ন্যায্যমূল্য দাবিতে ফুঁসে উঠেছে রংপুরের কৃষক

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

আমন ধানের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে রংপুরের কৃষকরা। জেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে ন্যায্যমূল্যের দাবি জানাচ্ছেন। কৃষকের অভিযোগ, উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক কম দামে ধান বিক্রি করতে গিয়ে মণপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। বর্তমানে জেলার হাট-বাজারে প্রতিমণ আমন ধান ৫০০-৬০০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। গত বোরো  মৌসুমে ধানের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে ধান ফেলে দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিলেন কৃষকরা।

এদিকে আমন ধানের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে আজ বেলা ১২টায় রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে কৃষক সমাবেশ ডেকেছে জেলা কৃষক সমিতি। সমাবেশ শেষে একই দাবিতে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপিও দেবেন কৃষকরা। সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল বলেন, প্রতিবছর সরকার ধান-চালের দর বেঁধে দেয়। চালের পাশাপাশি ধানও কেনা হয়। এবছর আমন মৌসুমে শুধু চালের দর বেঁধে দিয়ে ধান না কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাই ধানের সরকারি দর ঘোষণা এবং কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার দাবিতে কৃষক সমাবেশ ডাকা হয়েছে। দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর কর্মসূিচ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

গত ১২ নভেম্বর সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত ৩১ টাকা কেজি দরে ২ লাখ মেট্রিক টন আমন চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এবছর আমন ধান না কেনার সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে।

পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের কলাবাড়ি গ্রামের কৃষক আবদুল বারেক জানান, ‘এবছর জমি তৈয়ার করা থাকি শুরু করি ধান কাটি ঘরোত তোলা পর্যন্ত একমণ আমন ধান উৎপাদন খরচ পড়চে  ৮০০ টাকা। সেই ধান বেচা নাগতোচে  ৫০০-৬০০ টাকা মণ দরে। মণে লোকসান হইতোচে ২০০-৩০০ টাকা।  বোরো মৌসুমেও মণে ৩০০-৪০০ টাকা করি লোকসান দিচি’। 

জানতে চাইলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মকবুল হোসেন বলেন, সরকার প্রতিবছর ধানের দর বেঁধে দিলেও খুব একটা ধান কেনে না। উৎপাদিত ধানের অধিকাংশই কিনে থাকে মজুতদার ও চালকল মালিকরা। তবে সরকারিভাবে ধানের দর বেঁধে দেওয়া হলে তার প্রভাব বাজারে পড়ে। তখন মজুতদাররা তাদের ইচ্ছেমতো ধান কিনতে পারে না। এ বছর দাম বেঁধে না দেওয়ায় মজুতদাররা ইচ্ছেমতো দরে ধান কিনবে। ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হবে কৃষক। এ বছর প্রতি কেজি আমন ধান উৎপাদনে খরচ পড়েছে ২০ টাকা। এ হিসেবে মণপ্রতি (৪০কেজি) খরচ পড়ে ৮০০ টাকা। কিন্তু বাজারে ৫০০-৬০০ টাকা মণ দরে ধান কেনাবেচা হচ্ছে। ধান বিক্রি করতে গিয়ে মণে ২০০-৩০০ টাকা লোকসান গুণছে হচ্ছে কৃষকদের।

সর্বশেষ খবর