শনিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সুন্দরবনের ভিতর দিয়ে নৌযান চলছেই

কার্যকর হয়নি সুপারিশ জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

বাগেরহাট প্রতিনিধি

ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সুন্দরবন এলাকার নৌপথে একের পর এক লাইটারেজ জাহাজ দুর্ঘটনায় পড়ার পরও সে পথে থেমে নেই বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল। জাহাজ দুর্ঘটনায় জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়লেও বন বিভাগ এবং পরিবেশবিদদের নিষেধ উপেক্ষা করে সুন্দবনের ভিতর দিয়ে বাণিজ্যিক নৌযান চলাচল অব্যাহত রেখেছে বিআইডব্লিউটিএ। মংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ-চ্যানেলটি খননের পর কয়েক মাস ধরে সেখান দিয়ে বাণিজ্যিক নৌযান চলাচল করলেও বন্ধ হয়নি সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে লাইটারেজ জাহাজ চলাচল। ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে ‘সাউদার্ন স্টার-৭’ নামে ফার্নেস তেলবাহী ট্যাংকার প্রায় সাড়ে তিন লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে ডুবে যায়। এতে সুন্দরবনের ভিতর বিভিন্ন নদী-খালে তেলের আস্তরণ ছড়িয়ে জীববৈচিত্র্য পড়ে হুমকির মুখে। ওই ঘটনার পর সুন্দরবন সুরক্ষায় জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দলসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সুপারিশ আজও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এ ঘটনার পর ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা রোধে নেওয়া হয়নি কার্যকর ব্যবস্থা। অন্যদিকে তেলবাহী ট্যাংকার ডুবির ঘটনায় বনবিভাগের করা ১০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলাটির এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। ‘সাউদার্ন স্টার-৭’ দুর্ঘটনার পর ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর উদ্ভূত পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং তা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিকে (ইউএনডিপি) অনুরোধ করে সরকার। তাত্ক্ষণিক জাতিসংঘের দুর্যোগ পর্যালোচনা ও সমন্বয়বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ইউএনডিপি, ইউএসএআইডি, ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন ম্যাকানিজম, ফরাসি সরকার এবং ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির প্রতিনিধিদের নিয়ে ২৫ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল সুন্দরবন এলাকা পর্যবেক্ষণ করে। ট্যাংকারডুবির ঘটনায় পরিবেশের ওপর তেলের প্রভাব পড়েছে সীমিত আকারে মতামত জানিয়ে পর্যবেক্ষক দলটি সুন্দরবনের মতো মহামূল্যবান এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইটের মাঝখান দিয়ে নৌচলাচল বন্ধের সুপারিশ করে।

সর্বশেষ খবর