সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ধামরাইয়ে অবৈধ বিদ্যুতের ছড়াছড়ি

আজাহারুল ইসলাম রাজু, ধামরাই

ঢাকার ধামরাই ও কুশুরা পল্লীবিদ্যুত্ অফিসে চলছে চোরাই ও অবৈধ বিদ্যুতের খুঁটির (পুল) রমরমা বাণিজ্য। বিদ্যুত্ অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে দালালরা অবৈধভাবে বিদ্যুতের সংযোগ দিচ্ছে। এতে সরকার রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি গ্রাহকরা না বুঝে ওই বিদ্যুত্ ব্যবহার করে বিপদে পড়ছেন। ধামরাইয়ের গোপালকৃষ্ণপুর গ্রামের আতাউর রহমান জানান, পল্লীবিদ্যুত্ অফিসের দালাল ধামরাইয়ের বানেশ্বর গ্রামের আবেদ আলী নতুন বিদ্যুত্ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে ৩৬ হাজার টাকা নেন। পরে তিনি অফিস থেকে অবৈধ মিটার, ড্রপ তার ও খুঁটি চুরি করে নিয়ে তার বাড়িতে বিদ্যুত্ সংযোগ দেয়। তিন মাসেও তার বিদ্যুত্ বিল না আসায় তিনি বিদ্যুত্ অফিসে খবর দেন। পরে সোয়াপুর বিদ্যুত্ অফিসের লাইনম্যান আতাউর রহমানের বাড়ির মিটারটি অবৈধ বলে তার বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। উত্তর চৌহাট গ্রামের আজাহার আলী ও আবদুল মালেকের বাড়িতে বিদ্যুতের খুঁটি দেওয়ার কথা বলে ধামরাইয়ের কুশুরা পল্লীবিদ্যুত্ অফিসের ইলেকট্রিশিয়ান ও দালাল সাদ্দাম হোসেন তাদের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নেন। এরপর  অফিস থেকে খুঁটি চুরি করে আজাহার আলী ও আবদুল মালেকের বাড়ির পাশে মুন্নাফ কেরানির জমিতে একটি বিদ্যুতের খুঁটি বসিয়ে লাইন নির্মাণ করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে রবিবার কুশুরা পল্লীবিদ্যুত্ অফিসের এজিএম আশরাফুল আলম, ওয়্যারিং পরিদর্শক আতাউল ইসলাম ও বালিয়া অভিযোগ কেন্দ্রের লাইনম্যান ওই চোরাই ও অবৈধ বিদ্যুতের খুঁটিও তার অফিসে নিয়ে যান। একই ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছে ধামরাইয়ের দীঘল গ্রামের ১৪টি পরিবার। ওই গ্রামের বাছেক আলী, আবদুর রফিক, আবুল হোসেন, মুন্না মিয়াসহ অনেকে জানান, আট বছর আগে (২০০৭) নতুন পাঁচটি খুঁটিসহ তাদের বিদ্যুত্ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে দীঘল গ্রামের মোক্তার আলীর ছেলে দালাল হাবিবুর রহমান প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা নেন। পরে পাঁচ বছর তাদের ঘোরানোর পর ২০১২ সালে পল্লীবিদ্যুত্ অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অবৈধভাবে অফিস থেকে পাঁচটি খুঁটি ও ড্রপ তার নিয়ে বিদ্যুত্ লাইন নির্মাণ করে। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যুত্ অফিসের আর কেউ তাদের বিদ্যুত্ সংযোগ দেননি। কিন্তু গত আট বছর ধরে ওই পাঁচটি খুঁটিতে ড্রপ তার এখনো টাঙানো রয়েছে। এ ব্যাপারে দালাল হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে ধামরাই পল্লীবিদ্যুত্ অফিসের দালাল রহিমকে তিনি ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। এ রকম প্রতারণা শুধু উত্তর চৌহাট, গোপালকৃষ্ণপুর ও দীঘল গ্রামেই নয়, ধামরাইয়ের বিলকুশনাই, ডাউটিয়া, কালামপুর, গোয়ালদী গ্রামেও রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। কুশুরা পল্লীবিদ্যুত্ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মাহাবুব আলী বলেন, খুঁটি ও তার জব্দ করা হয়েছে।  ঢাকা পল্লীবিদ্যুত্ সমিতি-৩ এর জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়গুলো আমার জানা নেই। দুর্নীতি অনিয়মের সঙ্গে জড়িত অফিস স্টাফদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দালালদের বিরুদ্ধেও মামলা করা হবে।

সর্বশেষ খবর