বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বন্দুকযুদ্ধে নয়ন বাহিনীর প্রধান ছগির নিহত

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে র্যাব-৬ ও বাগেরহাট ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বনদস্যু ‘নয়ন’ বাহিনীর প্রধান ছগির ভাণ্ডারী (৩৮) নিহত হয়েছে। গতকাল সকাল ৭টার দিকে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের পানির ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বন্দুকযুদ্ধের পর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে শরণখোলা হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিত্সক ছগিরকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র ও সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। ছগির বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরণ গ্রামের আনোয়ার ভাণ্ডারীর ছেলে। দুর্ধর্ষ বনদস্যু বেল্লাল নিহত হওয়ার পর ছগির ভাণ্ডারী ‘নয়ন’ বাহিনী নামে দস্যুদল গঠন করে সুন্দরবনে দস্যুতা চালিয়ে আসছিল। গত এক মাসে নয়ন বাহিনী দুই শতাধিক জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে।

বাগেরহাটের ডিবি পুলিশের এসআই গাজী ইকবাল জানান, নয়ন বাহিনী সম্প্রতি সুন্দরবনে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে জেলেদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন ও মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে। এমন খবরে গোয়েন্দা তত্পরতা চালানো হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব ও বাগেরহাট গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবির) একটি দল মঙ্গলবার রাতে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের মরাভোলা এলাকায় অভিযান শুরু করে। বুধবার সকাল ৭টার দিকে যৌথবহিনীর সদস্যরা সুন্দরবনের পানিরঘাট এলাকায় পৌঁছালে তাদের লক্ষ্য করে দস্যুরা অতর্কিতে গুলি চালালে যৌথবাহিনীর সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে দস্যুরা পিছু হঠলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছগির ভাণ্ডারীকে আটক করে। পরে শরণখোলা হাসপাতালে আনার পর চিকিত্সক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

খুলনা র্যাব-৬ এর অধিনায়ক খোন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বাহিনী প্রধানকে শরণখোলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিত্সকরা মৃত ঘোষণা করেন। ছগির ভাণ্ডারী ‘নয়ন’ নামে বনদস্যু বাহিনী গঠন করে দীর্ঘদিন সুন্দরবনে জেলে-বাওয়ালিদের নৌকায় ডাকাতি এবং তাদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল। ছগিরের বিরুদ্ধে বাগেরহাটের বিভিন্ন থানায় দস্যুতার একাধিক মামলা রয়েছে।

র্যাব-৬ এর মিডিয়া অফিসার সিনিয়র এএসপি মো. হারুন অর রশিদ জানান, অভিযানে র্যাব-৬ ও বাগেরহাট ডিবি পুলিশের একটি দল এই অভিযানে অংশ নেয়। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে দেশি-বিদেশি পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র, সাত রাউন্ড গুলি, পাঁচ রাউন্ড গুলির খোসা ও দুটি বান্ডুলিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত দস্যুর মৃতদেহ, উদ্ধারকৃত অস্ত্র এবং গুলি শরণখোলা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের এসআই গাজী ইকবাল বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। 

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম মিয়া জানান, ছগিরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর