মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ঝুঁকিতে ১২ হাজার কৃষক ও শ্রমিকের জীবিকা

স্লুইসগেটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে পুকুর খনন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর পবা উপজেলার ঝুজকাই ও বড়বাড়িয়ার মধ্যবর্তী পুরাতন স্লুইসগেট সংলগ্ন স্থানে চলছে পুকুর খননের কাজ। স্লুইসগেটের সামনে পুকুর খননের ফলে পানি নিষ্কাশনে সৃষ্টি হবে প্রতিবন্ধকতার। এ কারণে ওই এলাকার তিনটি গ্রামসহ ৮০০ বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। ফলে জমি আবাদ করতে না পেরে বেকার হয়ে পড়বেন দুই হাজার কৃষক ও প্রায় দশ হাজার কৃষিশ্রমিক। সম্প্রতি পবা উপজেলা প্রশাসন পুকুর খননের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এলাকায় মাইকিং করেছে। এরপরও একটি চক্র খনন কাজ অব্যাহত রেখেছে। প্রতিকার চেয়ে শতাধিক কৃষকের পক্ষে ঝুজকাই গ্রামের মোজাহার আলী জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদনও করেছেন। আবেদনের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে পবার ইউএনও এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে। এদিকে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে পুকুর খনন অব্যাহত থাকায় তিনটি গ্রামের কৃষক এবং কৃষি শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। দ্রুত খনন বন্ধ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। অন্যদিকে যে চক্রটি পুকুর খননের কাজ অব্যাহত রেখেছে, তারা কৃষকদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে থাকায় যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে আবদুল শরিফ গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে ড্রেজার দিয়ে পুকুর খননের কাজ শুরু করেন। প্রায় ১০ বিঘা জমিতে এ কাজ চলছে। তার দেখাদেখি ঝুজকাই গ্রামের জুলমত আলীর ছেলে ইব্রাহিম খলিলও পুকুর খনন করছেন। একইভাবে খড়খড়ি এলাকার তাজুল ইসলামসহ কয়েকজন মাছচাষী প্রস্তুতি নিচ্ছেন পুকুর খননের। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইব্রাহিম খলিল বলেন, স্লুইসগেটের পাশ থেকে ১০ ফুট ছেড়ে পুকুর খনন করা হচ্ছে। ফলে পানি নিষ্কাশনে কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া পুকুর খননের জন্য ভূমির শ্রেণি-পরিবর্তনে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করা হয়েছে। একই মন্তব্য করেন আরেক অভিযুক্ত আবদুল শরিফ। পবা উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আশরাফুল হক বলেন, বিষয়টি নিয়ে এলাকার লোকজন তার কাছে এসেছিলেন। তিনি ইউএনওকে এ ব্যাপারে অবহিত করেছেন। এরপরও পুকুর খনন অব্যাহত থাকলে তা বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়েলের ১৬১ অনুচ্ছেদের ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ৬৮ নম্বর স্মারকে জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো রাজস্ব কর্মকর্তার অনুমোদন ছাড়া কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। এ ব্যাপারে ইউএনও সেলিম হোসেন বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষি জমির শ্রেণিকরণ পরিবর্তন করা যাবে না। তাই পুকুর খনন বন্ধের জন্য প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সতর্কতামূলক মাইকিং করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়।

সর্বশেষ খবর