শনিবার, ১২ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

নতুন দিগন্তের হাতছানি সীমান্ত এলাকায়

নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি

নতুন দিগন্তের হাতছানি সীমান্ত এলাকায়

পাহাড় খুঁড়ে চলছে সুনামগঞ্জ-জামালপুরের বকশিগঞ্জ ধানুয়াকামালপুর পর্যন্ত সীমান্ত সড়কের নির্মাণকাজ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

এশিয়ান কানেকটিভিটি, সীমান্ত সড়ক ও নাকুগাঁও স্থলবন্দর সড়ক নির্মাণ হওয়ার ফলে সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলছে শেরপুরের নালিতাবাড়ীসহ সুনামগঞ্জ-জামালপুরের বকশিগঞ্জ পর্যন্ত গোটা সীমান্ত এলাকা। অবহেলিত সীমান্তবাসীর মধ্যে বইছে আনন্দের জোয়ার। সড়ক ও জনপথ সূত্র জানায়, ইতিমধ্যেই বর্ধিত ব্যয়সহ ২৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নকলা থেকে নালিতাবাড়ী নাকুগাঁও স্থলবন্দর সড়কের ২৯.৫ কিলোমিটার দুই লেন সড়কের ২৩ কিলোমিটার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বাকি অংশের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

এ দিকে পাহাড় খুঁড়ে সীমান্ত সড়কের নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। সুনামগঞ্জ থেকে জামালপুর বকশিগঞ্জের ধানুয়া কামালপুর স্থলবন্দর পর্যন্ত ১৭১ কিলোমিটার সীমান্ত সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। ১৮ ফিট প্রশস্ত এ সড়কটি নির্মাণ হওয়ার ফলে সীমান্তের সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, শেরপুর ও জামালপুর জেলার ১১টি উপজেলার সীমান্তবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে। ১৭১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে শেরপুর জেলায় ৫০ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক ৮৫ কোটি টাকায় নির্মাণকাজ চলছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। অন্যসব জেলাতেও সীমান্ত এ সড়কটির নির্মাণকাজ চলছে। পরবর্তীতে সীমান্ত সড়কটি সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট পর্যন্ত এবং কামালপুর থেকে  লালমনিরহাট বুড়িমারি স্থলবন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হওয়ার কথা রয়েছে। সীমান্ত এ সড়কটি নির্মাণ হওয়ার ফলে পাহাড় আর বন-বনানী ছুঁয়ে ছুঁয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য স্পর্শ করে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের উঁচু-নিচু টিলা মাড়িয়ে গাড়ি চলবে। এর মধ্য দিয়ে দেশের পূর্ব-উত্তর সীমান্তের অমিত সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে। অবহেলিত সীমান্তবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে। এতদিন সুনামগঞ্জ থেকে উত্তরবঙ্গে যাতায়াত করতে ঢাকা হয়ে যেতে হতো। এখন এ সড়ক নির্মাণ হওয়ার ফলে সহজেই উত্তরবঙ্গে যাতায়াত করা যাবে।  নাকুগাঁও স্থল শুল্ক বন্দরটি ব্রিটিশ আমল থেকেই চালু ছিল। কিন্তু ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুুদ্ধের পর অজ্ঞাত কারণে এ বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ৩৩ বছর বন্ধ থাকার পর এলাকার সংসদ সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ১৯৯৭ সালে সব বৈধ পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্টসহ বন্দরটি পুনরায় চালু করার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ২০০২ সালে এক প্রজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে এই বন্দরে কয়লা ও পাথর ছাড়া সব পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ফলে সম্ভাবনাময় এই স্থলবন্দরের কার্যক্রম অনেকটা সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। এরপর ২০১১ সালে ৩১ ডিসেম্বর নাকুগাঁও স্থল শুল্ক বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। এবং উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। বন্দরের ওয়্যার হাউস, ডরমেটরিসহ সব অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ১১ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সব স্থাপনা নির্মাণেরকাজ শেষ হয়েছে। ২০১৪ সালের ১৮ জুনে পূর্ণাঙ্গ বন্দও হিসেবে উদ্বোধন করেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। সুত্র জানায়, বন্দর সম্প্রসারণের জন্য আরও ১০০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। শিগগিরই জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হবে। তাতে বাংলাদেশের বড় স্থলবন্দরগুলোর মধ্যে হবে নাকুগাঁও স্থলবন্দর।

সর্বশেষ খবর