কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার আদমপুর বাজার এখন ধ্বংসস্তূপ। লাগানো আগুনে বাজারের দেড় শতাধিক দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। সর্বস্ব হারিয়ে অনেক ব্যবসায়ী শুধুই বিলাপ করছেন। তাদের কান্নায় এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত শুক্র ও শনিবার আদমপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল মন্নাফ ও সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল করিম বাদলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে বাজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
কিশোরগঞ্জের ভাটি এলাকার সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে পরিচিত আদমপুর বাজার। ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে যে বাজারটি সব সময় মুখরিত থাকত, সেখানে এখন শ্মশানের নীরবতা। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাজারের দেড় শতাধিক দোকান। এতে আহত হয়েছেন শতাধিক লোক।
বাজারের ব্যবসায়ী ছমির উদ্দিন জানান, তার মেশিনারিজের দোকানটি পুড়ে গিয়ে ৬০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়ী আলমগীর জানান, তার কাপড়ের দোকানটি পুড়ে গিয়ে ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়ী হারিছ মিয়া বলেন, এমন ঘটনা একাত্তর সালেও ঘটেনি। রবিবার আদমপুর বাজারে এ প্রতিবেদকের সামনে অনেক ব্যবসায়ী কান্নায় ভেঙে পড়েন।শুধু আগুনই দেওয়া হয়নি, লুটও করা হয়েছে দোকানের অনেক মালামাল ও নগদ টাকা। এ ঘটনায় সর্বস্ব হারিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। নতুন করে আবার ব্যবসা শুরু করার সামর্থ্য তাদের নেই। পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন তারা অজানা ভবিষ্যতের প্রহর গুনছেন। ঘটনার পর আদমপুর বাজারে পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও ব্যবসায়ীদের মাঝে বিরাজ করছে আতঙ্ক। এ ঘটনায় বাজারের ১০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করেছেন। পুলিশ ক্যাম্প বসানোর পর থেকে পরিস্থিতি শান্ত বলে জানিয়েছেন ক্যাম্পের দায়িত্বরত এসআই মাসুদ আনোয়ার আকন্দ। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ১৯০ জনের তালিকা পাওয়া গেছে। তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হবে।