শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

একটি দুর্ঘটনা ৬ বোনের সারা জীবনের কান্না

দিনাজপুর প্রতিনিধি

একটি দুর্ঘটনা ৬ বোনের সারা জীবনের কান্না

প্রতিষ্ঠা লাভের আগেই বাবা মাকে হারিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি পার্বতীপুরের ছয় কিশোরী —বাংলাদেশ প্রতিদিন

সড়ক দুর্ঘটনায় বিধবা মা মারা যাওয়ার পরই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে শিশু-কিশোরী ছয় বোনের ভবিষ্যৎ জীবন। বাবার পর মা-ও না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় অভিভাবক বলতে কেউই রইল না ওদের। পড়ালেখা বন্ধের উপক্রম ছোট তিন বোনের। কঠিন এই দুঃসময়ে তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার মতোও কেউ নেই। জানা যায়, পার্বতীপুর-দিনাজপুর সড়কের ফ্যাক্টরি পাড়া মোড়ে গত রবিবার সন্ধ্যায় ট্রাকচাপায় মারা যান বিধবা আরজিনা বেগম (৪৫)। দুর্ঘটনার সময় তিনি তার একটি গাভী নিয়ে ওই পথে বাড়ি ফিরছিলেন। আরজিনা মন্মথপুর ইউনিয়নের ছোট হরিপুর মুন্সীপাড়ার মৃত মোফাখখারুল ইসলামের স্ত্রী। প্রতিবেশীরা জানান, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল স্ত্রী ও ছয় কন্যাসন্তান রেখে মারা যান পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মোফাখখারুল ইসলাম। তার মৃত্যুর পর লেখাপড়া ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হন বড় দুই মেয়ে মুক্তা ও রিক্তা। তারা দুজনেই কাজ নেন ঢাকায় গার্মেন্টে। বর্তমানে মুক্তা (২৪), রিক্তা (২২) ও মোমিনা (১৮) বিবাহযোগ্য। ছোট বোন লিপি (১৩) অষ্টম, মমতাজ (১৫) নবম ও মুসরাত জাহান ইতি চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। এ তিন বোনই মেধাবী ছাত্রী বলে জানা গেছে। স্থানীয় মেনহাজুল হক বলেন, পরিবারটির পাঁচ শতক বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। মায়ের মৃত্যুর পর ছোট চার বোনকে বাড়ি রেখে কর্মস্থলে ফিরে যাবেন, নাকি কাজ ছেড়ে বোনদের সঙ্গে বাড়িতে থাকবেন এ নিয়ে উভয় সংকটে পড়েছেন বড় বোন মুক্তা ও রিক্তা। মুক্তা ও রিক্তা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বাবা-মার ইচ্ছা ছিল ছয় বোনকে শিক্ষিত করার। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে আমরা দুই বোন সংসারের হাল ধরেছিলাম। এখন অবিভাবকহীন হয়ে কীভাবে ছোট বোনদের পড়ালেখা ও সংসার চালাব ভেবে পাচ্ছি না।’

সর্বশেষ খবর