বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কোটি কোটি টাকার নলকূপের অধিকাংশই অকেজো

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা

পিরোজপুর প্রতিনিধি

পিরোজপুর সদর উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৩১টি। এর বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে নেই বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। দিনের পর দিন এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পানির জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জানা যায়, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর পিরোজপুর প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে কোটি টাকা খরচ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে গভীর নলকূপ বসিয়েছিল। কিছুদিন পরই অকেজো হতে শুরু করে নলকূপগুলো। সদর উপজেলার অধিকাংশই বর্তমানে অকেজো। উপজেলার ব্রাহ্মণকাঠি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় নবনির্মিত ঝকঝকে ভবন। কিন্তু নেই কোনো নলকূপ তথা বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। জানা যায়, সাত বছর ধরে স্কুলটিতে চলছে এ অবস্থা। প্রধান শিক্ষক নিহার কণা জানান, তিনি ২০০৯ সালে এ বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর নিজ উদ্যোগে একটি নলকূপ বসিয়েছিলেন। সেটি কয়েক দিন পরে চুরি হয়ে যায়। এরপর থেকে বিদ্যালয়ে খাবার পানির ব্যবস্থা নেই। আশপাশের বাড়ি থেকে পানি খেয়ে আসতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। বার বার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি। আশপাশের আলামকাঠি, মুক্তারকাঠি, উত্তরপাড়া, পালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। এসব বিদ্যালয়ে একটি করে নলকূপ থাকলেও তা অকেজো। কোনোটিতে রয়েছে নলকূপের অংশবিশেষ। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, জনস্বাস্থ্য কার্যালয় থেকে বছর দুই আগে এসব নলকূপ বসিয়েছিল। কিন্তু সবকিছু নিম্নমানের হওয়ায় কিছুদিনের মধ্যে অকেজো হয়ে গেছে। পালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লুতত্ফা খানম জানান, ২০১৪ সালে জনস্বাস্থ্য কার্যালয় থেকে একটি নলকূপ বসিয়েছিল। সেটি নষ্ট হয়ে গেলে জনস্বাস্থ্য অফিসের লোক নলকূপটি তুলে নিয়ে যান। তার বিদ্যালয়ে পৌরসভার লাইনের পানি আছে, তবে তা পর্যাপ্ত নয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর পিরোজপুর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী রুস্তম আলী নিম্নমানের নলকূপ বসানোর অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বুয়েট বা কুয়েট থেকে মান পরীক্ষা করে এগুলো বসানো হয়েছে। লবণাক্ততার কারণে নষ্ট হয়েছে। অভিযোগ পেলে ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান জুয়েল জানান, দুই বছর আগে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল থেকে বিদ্যালয়ে বেশকিছু নলকূপ বসানো হয়েছিল। কিছু বিদ্যালয় থেকে নলকূপের সমস্যার অভিযোগ পেয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ে জানিয়েছি, তারা ব্যবস্থাও নিচ্ছে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর