রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নেতা প্রবাসী চাকরিজীবীর নামে হতদরিদ্রদের চাল

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার চরযশোরদী ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের চাল যাচ্ছে সচ্ছল ব্যক্তিদের পেটে। অভিযোগ রয়েছে, ইউনিয়নের এক হাজার ৪৯২ পরিবারে ১০ টাকা কেজির চাল দেওয়ার কথা থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ম্যানেজ করে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বাররা তা লুটেপুটে খাচ্ছেন। তবে অনিয়ম-দুর্নীতির সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান পথিক।

জানা যায়, চরযশোরদী ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের চালের কার্ড পেয়েছেন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা, প্রবাসী, চাকরিজীবী ও ধনাঢ্যরা। ঘটছে চাল মাপে কম দেওয়ার ঘটনা। এক পরিবারের একাধিক ব্যক্তি কার্ড পেয়েছেন এমন নজিরও রয়েছে। তাছাড়া এক ডিলারের কার্ড অন্য এলাকার ডিলারের আওতায় ফেলে চাল আত্মসাৎ করা হচ্ছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। অভিযোগে ইউনিয়নের কালিবাড়ী বাজারের ডিলার ননী গোপালের বিরুদ্ধে চাল গুদামে রেখে রাতের আঁধারে অন্যত্র বিক্রির কথা উল্লেখ রয়েছে।

কালিবাড়ী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বরাদ্দ চালের সঙ্গে গুদামে থাকা চালের মিল নেই। ৭৪৬টি কার্ডের অনুকূলে স্টকে চাল থাকার কথা ৪৪৭ বস্তা। কিন্তু সেখানে পাওয়া গেছে ২৯০ বস্তা। বাকি চাল কোথায় এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি ডিলার ননী গোপাল। তাছাড়া ওজনে কম দেওয়ার পাশাপাশি একই ব্যক্তিকে কয়েকজনের চাল দেওয়া হচ্ছে। কার্ডের ছবির সঙ্গে চাল নেওয়া ব্যক্তির মিল নেই অনেকের। ডিলার ননী গোপালের ছেলে জানান, গুদামে জায়গা না থাকায় চাল অন্যত্র রাখা হয়েছে। কম দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গুদাম থেকে চাল কম দেওয়া হচ্ছে বলে আমরাও কিছুটা কম দিচ্ছি।’ স্থানীয় অনেকে অভিযোগ করেন, ইউনিয়নে যাদের নামে কার্ড বিতরণ করা হয়েছে তাদের বেশির ভাগই সচ্ছল। ভিক্ষুক, জেলে, ভ্যানচালক, দিনমজুর, প্রতিবন্ধীর নামে কার্ড বরাদ্দ না হলেও প্রভাবশালীদের নামে কার্ড রয়েছে। হতদরিদ্রদের অনেকে ক্ষোভপ্রকাশ করে জানান, যাদের কিছুই নেই তারা কার্ড পাননি। কার্ড দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক নেতা, ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারের তোষামোদকারী সচ্ছল ব্যক্তিদের।

সৈয়দপুরে অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে : সৈয়দপুর প্রতিনিধি জানান, নীলফামারী সৈয়দপুর উপজেলার দুই ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজির চাল প্রাপ্তদের তালিকা তৈরিতে অনিয়মের সত্যতা মিলেছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, কামারপুকুর ও খাতামধুপুর ইউপির হতদরিদ্রদের বদলে ধনী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সূত্রমতে, উপজেলার উল্লিখিত দুটি ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডপ্রাপ্তদের অনেকে ব্যবসায়ী ও সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী। তালিকা তৈরিতে সরকারি বিধিবিধান উপেক্ষা করে দুস্থদের বদলে ধনীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সচ্ছল ব্যক্তিরা অক্টোবর মাসের চাল উত্তোলন করলে ফাঁস হয়ে যায় অনিয়ম। পরে দুস্থদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয় ইউএনও বরাবর।

সর্বশেষ খবর