রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

স্থানীয়দের তোপের মুখে পালালেন নিয়োগ কর্তারা

শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গোপনে সম্পন্ন করতে যান কয়েকজন কর্মকর্তা। এ সময় সাংবাদিক ও স্থানীয়দের তোপের মুখে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে পালিয়ে যান নিয়োগ কর্তারা। শিয়ালকোল ইউনিয়নে শ্যামপুর কেআইএইচ দাখিল মাদ্রাসায় গতকাল এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, চৌহালীর দক্ষিণ জোতপাড়া মাদ্রাসা সুপার লুত্ফর রহমান, শ্যামপুর কেআইএইচ-এর আব্দুল লতিফ ও শহরের খাতুনে জান্নাত মাদ্রাসার শিক্ষক খায়রুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা গোপনে সম্পন্ন করে লাখ লাখ টাকা হাতাচ্ছেন। শনিবার সকালে জোতপাড়া মাদ্রাসার কৃষি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে না নিয়ে চৌহালী শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেম ওবাইদ ও ডিজির প্রতিনিধি জান্নাতুল নাহারের যোগসাজশে সদর উপজেলার শ্যামপুর মাদ্রাসায় নেওয়ার পাঁয়তারা করেন। লিখিত পরীক্ষা শেষে সাংবাদিক ও এলাকাবাসী বিষয়টি টের পেয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে জান্নাতুল নাহার উল্টাপাল্টা বুঝান। একপর্যায়ে স্থানীয়রা ক্ষেপে গেলে নিয়মবহির্ভূত নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে জান্নাতুল সবাইকে নিয়ে পালিয়ে যান। অভিযোগ রয়েছে, খাতুনে জান্নাত মাদ্রসার শিক্ষক খায়রুল আলম অর্থ চুক্তির ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসা সুপার দিয়ে গোপনে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের ব্যবস্থা করেন। বিষয়টি জানতে খায়রুলের বাসায় গেলে প্রতিনিধিকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলে তিনি সটকে পড়েন।

শ্যামপুর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ বলেন, ‘সরকারি অনুমতি নয়, চৌহালী মাদ্রাসা সুপারের অনুরোধে এখানে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’ মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকরা জানান, আব্দুল লতিফ, খায়রুলসহ কয়েকজন শিক্ষক ডিজির প্রতিনিধিদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মাদ্রাসার নিয়োগ পরীক্ষা এই মাদ্রাসা নিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

বিধিবর্হিভূতভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জোতপাড়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ লুত্ফর রহমান বলেন, ‘তার প্রতিষ্ঠানটি দুর্গম এলাকায় হওয়ায় এখানে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে মাত্র।’ জোতপাড়ার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানান, তার মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এমন কথা বলে অধ্যক্ষ তাকে এখানে নিয়ে এসেছেন। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না। চৌহালীর শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেম ওবাইদ জানান, স্কুল-কলেজে শিক্ষক নিয়োগে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার বিধান থাকলেও মাদ্রাসার  ক্ষেত্রে বাধ্য-বাধকতা নেই। তাই এখানে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। ডিজির প্রতিনিধি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জান্নাতুল নাহার বলেন, ‘বিধিবর্হিভূতভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি জেনে পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর