শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

পঞ্চগড়ে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ‘স্কেবিস’

♦ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ♦ ক্লিনিকগুলোতে ভিড় ♦ মিলছে না প্রতিষেধক

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ‘স্কেবিস’

চুলকানি রোগে আক্রান্ত শিশু কোলে মা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে স্কেবিস (চুলকানি) রোগের প্রাদুর্ভাব। কোথাও কোথাও রোগটি মহামারী আকার ধারণ করেছে। আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু। প্রতিনিয়ত ছোঁয়াচে এই রোগ নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে ভিড় করছে মানুষ। সরবরাহ কম থাকায় ক্লিনিকগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে না এ রোগের প্রতিষেধক। বয়োজ্যেষ্ঠরা বলছেন, ১৯৭৯-৮০ সালের দিকে এই রোগটি একবার এভাবে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছিল। পঞ্চগড় সদর হাসপাতালের পরিসংখ্যান বলছে, জেলায় প্রতিমাসে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ জন করে বাড়ছে। তবে বাস্তব চিত্র আরও ভয়ংকর। শুধু বোদা উপজেলার বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রতিদিন ২৫-৩০ নতুন স্কেবিস রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এসব ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা জানান, দিন দিন রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। জানা যায়, পঞ্চগড়ের ১০৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের অধিকাংশে এখন বেশি আসছেন চুলকানি আক্রান্তরা। পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ না থাকায় বিনা চিকিৎসায় ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। বোদার ভোলা বাসুনিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার শাহাজাহান আলী বলেন, ‘এলাকায় রোগটি মহামারি আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। রোগীর তুলনায় ওষুধ কম, তাই এক বোতল ওষুধ ভাগ করে দিতে হয়েছে। বর্তমানে ক্লিনিকে ওষুধ নেই। জানা যায়, পরিবারের একজনের মধ্যে এ রোগ দেখা দিলে অন্য সদস্যদের মাঝে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে তা ছড়াচ্ছে গ্রাম থেকে গ্রামে। আক্রান্তদের প্রথমে শরীরের একটি অংশে চুলকানি শুরু হয়। পরে ছেয়ে যায় পুরো শরীর। দ্রুত চিকিৎসা না নিলে বিভিন্ন অংশে ঘা-এর সৃষ্টি হয়। কম সময়ের মধ্যে সেরে উঠতে না পারলে ক্ষতে ভয়ংকর সংক্রমণ হতে পারে বলে জানা গেছে। কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রতিষেধক না পেয়ে দরিদ্র রোগীরা পড়ছেন বিপাকে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি ক্লিনিকে দুই-তিন মাস পর পর স্কেবিসের প্রতিষেধক ‘বেনজিন বেনজোয়েট’ (ইবহুুষ ইবহুড়ধঃব) ১২ বোতল করে সরবরাহ করা হয়। যা ক্লিনিকে প্রতিদিন আসা রোগীর প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। প্রত্যেক রোগীর জন্য এক বোতল ওষুধ বরাদ্দ থাকলেও এখন তা ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। বরং ওষুধ নিতে এসে নতুনভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. পিতাম্বর রায় জানান, স্কেবিসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার তথ্য পেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এক হাজার ৫০০ বোতল ‘বেনজিন বেনজোয়েট’ বরাদ্দের চিঠি এসেছে। ওষুধ এখনো আসেনি। এসে পৌঁছলে দ্রুত কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর