রবিবার, ২৮ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

চিকিৎসা সেবাবঞ্চিত ঠাকুরগাঁওর গ্রামাঞ্চলের গর্ভবতী মায়েরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

মায়ের গর্ভকালীন সুস্থতাই পারে সুস্থ শিশু জন্ম দিতে। এর জন্য অপরিহার্য নিরাপদ মাতৃত্ব। কিন্তু ঠাকুরগাঁও সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এখানে শিক্ষিত মানুষের হার কম। এ কারণে নিরাপদ মাতৃত্ব কাকে বলে সে বিষয়ে সচেতন নন এ জেলার গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ গর্ভবর্তী মা ও অভিভাবক।

ঠাকুরগাঁওয়ের বেশির ভাগ নারীই এখনো গর্ভকালীন অধিকার ও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। আবার বিভ্রান্তি ও অজ্ঞতার কারণে অনেকে চিকিৎসকের কাছে যেতে আগ্রহী নন। একদিকে অপ্রতুল চিকিৎসা সেবা, অন্যদিকে রয়েছে কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজব্যবস্থা। জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জরুরি প্রসূতি সেবা, গরিব ও দুস্থ মায়েদের জন্য মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কিম, পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিসহ নানা সেবা কার্যক্রম থাকলেও সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত সেবা দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন অনেক গর্ভবতী মা ও স্বজন।

জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ে ৫৩টি ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা, ১৪৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি আধুনিক সদর হাসপাতাল, একটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ও চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। কিন্তু এ সব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নানা গাফিলতির কারণে গর্ভবর্তীরা সঠিক সময়ে সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

জেলা পরিবার পরিকল্পনা দাবি করছেন, চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মীর দ্বারা সাত হাজার ৪৭২ জনকে সেবা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে স্বাভাবিক ডেলিভারি দুই হাজার ৯৫১ জন, সিজািরিয়ান ডেলিভারি হয়েছে তিন হাজার ৫০০। গর্ভজনিত জটিলতায় ছয়জন ও অন্যান্য কারণে মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৪০৩ জনের। কিন্তু এ সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারি সংকটের কারণে গর্ভবতীদের সঠিক সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সচেতন মহল বলছে, নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে সরকারের অঙ্গীকার ও টাকার অভাব নেই। অভাব মনিটরিংয়ের। তাই মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করার পাশাপাশি সবাইকে কমিটমেন্ট নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। ঠাকুরগাঁও পরিবার পরিকল্পনার উপ-পরিচালক তারিকুল ইসলাম জানান, সরকার মাতৃমৃত্যু হার কমানোর জন্য ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। তার দাবি, ঠাকুরগাঁওয়ের ৯৫ ভাগ গর্ভবতী নারী এখন স্বাস্থ্যসেবার আওতায় রয়েছে। স্বাস্থ্য অবকাঠামো বাড়ানোর পাশাপাশি জনবল তৈরি এবং চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ও ওষুধ সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর