শিরোনাম
সোমবার, ৫ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

সিরাজগঞ্জে ৫৫ প্রাথমিক স্কুলভবনের বেহাল দশা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জে ৫৫ প্রাথমিক  স্কুলভবনের বেহাল দশা

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গার বনবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিত্যক্ত হওয়ায় গাছতলায় চলছে পাঠদান

প্রায়ই খসে পড়ছে বিদ্যালয়ভবনের পলেস্তরা। ছাদে বড় বড় ফাটল। ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় পাঠদান-পরীক্ষা হয় গাছতলায়। আর মেঘ দেখলেই বাজে ছুটির ঘণ্টা। সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার বনবাড়ীয়া ও চৌহালীর মুরাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দৃশ্য এমনই। শুধু এ দুটি বিদ্যালয় নয় জেলায় এ রকম প্রায় ৫৫টি বিদ্যালয় রয়েছে যার ভবনের এমনই বেহাশ দশা।

জানা যায়, ১৯০৫ সালে বনবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৭ সালে নির্মাণ করা হয় পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবন। ২০০৫ সাল থেকে বিদ্যালয়ের ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তরা খসে পড়ছে। পরে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয় ভবনটি। এরপর থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা গাছতলায় ক্লাস করছে। মুরাদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা ১৮৮২ সালে। যমুনার করাল গ্রাসে কয়েক বছর আগে স্কুলভবনটি বিলীন হয়ে যায়। এরপর বিদ্যালটি নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হলেও কাজে গড়িমসি করায় গাছতলায়, কখনো টিনের ছাউনি বা পলিথিনের নিচে পাঠদান চলছে। একই অবস্থা পাগলা বোয়ালিয়া, হাটিকুমরুল ইউপির রশিদপুর, ধুবিল কালিবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। বনবাড়ীয়া স্কুলের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান, মুনসুর ও সিমু জানায়, প্রতিদিন ক্লাস রুম থেকে চেয়ার-বেঞ্চ বের করে গাছতলায় বয়ে এনে ক্লাস করতে হয়। একটু বৃষ্টি হলে দৌড়ে মানুষের বাড়িতে অথবা বেঞ্চ উল্টিয়ে তার নিচে থাকতে হয়। বই খাতা ভিজে যায়। ছাত্রী জান্নাত জানায়, বৃষ্টির মধ্যে ভাঙা বিল্ডিংয়ে গেলে পলেস্তরা খসে পড়ে অনেকে আহত হয়েছে। মুরাদপুর স্কুলের শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, বৃষ্টি হলেই বই খাতা ভিজে যায়। পানিতে তলিয়ে যায় স্কুল মাঠসহ আশপাশের জমি। পাঠদান চলে রাস্তার উপর গাছ তলায় আবার কখনো খোলা আকাশের নিচে। অভিভাবক আবু তাহের জানান, ছেলে-মেয়ে স্কুলে পাঠিয়ে আমরাও আতঙ্কে থাকি।

বনবাড়ীয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মাহমুদা খাতুন জানান, ভয়ে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী কমে যাচ্ছে। বার বার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে বলা হলেও কাজ হচ্ছে না। মুরাদ প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, ভবন ও শ্রেণিকক্ষ না থাকায় নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। শত কষ্টে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে পাঠদান চালিয়ে যেতে হয়। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা জানান, বনবাড়ীয়া বিদ্যালয়ের               জায়গা জটিলতার কারণে ভবন নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। অন্য ঝুকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ভবন নির্মাণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর