বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভরা বর্ষায়ও পানিশূন্য পঞ্চগড়ের ৩৪ নদী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

ভরা বর্ষায়ও পানিশূন্য পঞ্চগড়ের ৩৪ নদী

পানিশূন্য করতোয়া নদী। ছবিটি মঙ্গলবার তোলা

ভরা বর্ষা মৌসুমেও পানি নেই পঞ্চগড়ের প্রধান নদী করোতোয়ায়। অথচ এই করতোয়া ঘিরেই পঞ্চগড় শহরের গোড়াপত্তন হয়েছিল। তখন দুকূল প্লাবিত বয়ে যেত করতোয়ার। এখন মধ্য আষাঢ়েও করতোয়া যেন মরা খাল। শুধু করতোয়াই নয় জেলার ৩৪টি নদীর অবস্থা একই। নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে কৃষি, মাছ, জলদ উদ্ভিদসহ প্রাণীকূলেও। জেলায় দেখা দিয়েছে দেশীয় মাছের সংকট। জীবিকা নির্বাহ নিয়ে সঙ্কটে পড়েছেন জেলেরা। এদিকে করোতোয়া, ডাহুক, ভেরসা, চিলকা, চাওয়া থেকে বোমা মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের ফলে মরে যাচ্ছে এসব নদী। শাঁও ও করতোয়ার মিলনস্থল এবং বাংলাদেশে প্রবেশমুখে তেতুঁলিয়া উপজেলার ভদ্রেশ্বর এলাকায় পাথর তোলায় করতোয়ার বুকে সৃষ্টি হয়েছে বালির বাঁধ। পঞ্চগড়ের পাঁচ উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ছোট-বড় ৩৪টি নদী। ভেরসা, চাওয়াই, মহানন্দা, ডাহুক, বেরং, টাঙ্গন, তালমা, গোবরা, আলাইকুমারী, চিলকাসহ সব নদীর অবস্থা করতোয়ার মতোই নাজুক। প্রায় সবগুলোর উৎসস্থল ভারতের অভ্যন্তরে। করতোয়া পাড়ের কৃষক মতলুব আলী বলেন, ‘আষাঢ় মাস শেষের দিকে কিন্তু করতোয়াত পানি নাই। অথচ ১০-১৫ বছর আগে চৈত্র মাসেও খারাহাত পানি থাকতো।’ জেলে মাসুম আলী বলেন, ‘আগে নদীতে পা ফেললেই মাছ ঘিরে ধরতো। এখন সারা দিন জাল ফেলেও আধা কেজি মাছ পাওয়া যায় না। জেলেরা এখন অন্য কাম করছে।’ পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, উত্তরের এই জেলার উপর দিয়ে ৩৩টি নদী প্রবাহিত হয়েছে। অলিখিতভাবে আরও একটি নদীর সন্ধান পাওয়া গেছে। দেশের আর কোনো জেলার উপর দিয়ে এতো নদী প্রবাহিত না হলেও এ জেলার নদীর অবস্থা ভীষণ নাজুক। পঞ্চগড় পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে বিলুপ্ত ছিটমহল এলাকায় করতোয়ার পাঁচ কিলোমিটার খননের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ বছর আরও ৭৭ কিলোমিটার খননের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অন্য নদীগুলো খননের জন্যও প্রস্তাব পাঠানো হবে।

সর্বশেষ খবর