শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

বালাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী আশা মণি (৮)। প্রতিদিন তাকে প্রায় ১০ কিলোমিটার নদীপথ পেরিয়ে স্কুলে আসতে হয়। আশা মণি আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ওপারে চাঁদের চরের বাসিন্দা আশরাফুলের মেয়ে। শুধু আশা মণিই নয়, এভাবে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী চাঁদের চর থেকে তিস্তা পার হয়ে এপারে আসে লেখাপড়া করতে।

গত রবিবার দুপুরে নৌকা পারের সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিনিধির। এ সময় প্রথম শ্রেণির রাহেনা, সুলতানা, দ্বিতীয় শ্রেণির আসাদ বাবু ও দক্ষিণবালাপাড়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র মিজানুর, সিরাজুল ইসলাম জানান, তিস্তা নদীর ওপারে চাঁদের চরে শতাধিক পরিবারের বাস। এ চরে নেই কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাই শত কষ্ট হলেও তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা পার হয়ে আসে লেখাপড়া করতে। তাদের ভাষ্য মতে, সকাল ৮টার সময় বিদ্যালয়ে আসার জন্য বাড়ি থেকে বের হতে হয়। বিদ্যালয়ে আসতে দুই ঘণ্টা লেগে যায়। অনেক সময় একটু দেরি হলে নৌকা (খেয়া) ছেড়ে চলে যায় তাদের ফেলে। সেদিন আর ক্লাসে যাওয়া হয় না। নৌকা পারাপারে বছর শেষে ঘাটে টাকা দিতে হয়। বর্ষা মৌসুমে অনেক সময় নদী পার হতে তাদের ভীষণ ভয় লাগে বলেও জানায় এক শিক্ষার্থী। তাছাড়া চাঁদের চরে বসবাসরত অনেক পরিবার নদী পার হওয়ার ভয়ে তাদের সন্তান বিদ্যালয়ে পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করে। ফলে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এসব শিশু।

খেয়া নৌকার মাঝি সিরাজুল ইসলাম জানান, তিস্তার উত্তাল ঢেউ সামলে অনেক কষ্টে শিশুদের নিয়ে প্রতিদিন পারাপার করতে হয়। চরাঞ্চলে শিশুদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপন করা হলে সেখানে বসবাসরত সবাই লেখাপড়া শিখতে পারত। বালাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, তার বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী তিস্তার ওপারের চরাঞ্চলের। আদিতমারী উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা অনেক পরিশ্রমী ও মেধাবী। চর স্থায়ী না হওয়ায় সেখানে বিদ্যালয় স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর