ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহতদের সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে কুমিল্লার দাউদকান্দি শহীদনগরে নির্মাণ করা হয় ‘ট্রমা সেন্টার হাসপাতাল’। ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ট্রমা সেন্টারটি এখন প্রায় পরিত্যক্ত। বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসবিহীন হাসপাতালটি পারছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে। ২০ শয্যার এ ট্রমা সেন্টারে মাঝেমধ্যে চিকিৎসক এলেও ওষুধ-যন্ত্রপাতি না থাকায় রোগী আসেন না। বলা চলে ১১ বছর ধরে হাসপাতালটি প্রায় অচল পড়ে আছে।
শহীদনগরের বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহতদের সেবা দেওয়ার জন্য ট্রমা সেন্টারটি নির্মাণ করা হলেও ১১ বছরে সেটি কোনো সেবা দিতে পারেনি। আহত রোগীরা এসে ফেরত যান। হাসপাতালটি চালু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে দুর্ঘটনায় আহতরা দ্রুত সেবা পাবেন। প্রাণ রক্ষা পাবে অনেকের। কয়েকজন স্টাফ জানান, ২০ শয্যার হাসপাতালটিতে অভ্যন্তরীণ সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। ফ্যান-লাইট থাকলেও সেগুলো ঘুরে না কয়েক বছর ধরে। দিনের পর দিন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। শৌচাগারে পানি নেই। নিজেদের বাইরে থেকে পানির ব্যবস্থা করতে হয়। ওষুধ না থাকায় আউটডোরের রোগীও তেমন আসে না। কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রয়োজনীয় জনবল বরাদ্দ না থাকায় শহীদনগর ট্রমা সেন্টারসহ কুমিল্লার আরও ছয়টি ২০ শয্যার হাসপাতাল চালু করা যাচ্ছে না। আশা করছি দ্রুত জনশক্তি বরাদ্দ পাবো। জনবল এবং আর্থিক সহায়তা পেলে ট্রমা সেন্টারটি চালু করা হবে।’
জানা যায়, ২০০৬ সালের ৬ অক্টোবর তত্কালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনামন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন দাউদকান্দির শহীদনগরের ট্রমা সেন্টারটি উদ্বোধন করেন। কার্যক্রম চালু না হওয়ায় ২০১০ সালের ৩০ এপ্রিল হাসপাতালটি পুনরায় উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক। নির্মাণের ১১ বছর পার হলেও বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ না থাকায় হাসপাতালটি অকার্যকর পড়ে আছে। ডাক্তার, নার্স ও ওয়ার্ডবয় থাকলেও সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পাখির বর্জ্য, বৃষ্টির পানিতে মেঝেতে শেওলা জমেছে। ভেঙে গেছে দরজা-জানালা। স্থানীয়রা হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ চালুর দাবি জানিয়েছেন।