রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

কীটনাশকের বর্ধমান ব্যবহারে হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য

বারসিক’র গবেষণা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

কীটনাশকের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারে হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। কীটনাশক ক্রয় থেকে ছিটানোর সময় পর্যন্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া, ছিটানোর পরই কৃষি খেতে প্রবেশ, উন্মুক্ত জলাশয়ে ছিটানোর যন্ত্র ধোয়া, কীটনাশকের পাত্রের বহুমুখী ব্যবহার, কীটনাশক ব্যবহারের প্রশিক্ষণ না থাকা প্রভৃতি কারণে দীর্ঘমেয়াদি বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। সম্প্রতি সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) পরিচালিত গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে গতকাল গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও লোকজ আয়োজিত ‘কীটনাশক ব্যবহার ও এর ক্ষতিকর প্রভাব’ শীর্ষক মিট দ্য প্রেস অ্যান্ড ডায়ালগে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। গবেষণার ফল উপস্থাপন করেন বারসিক ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্লাইড স্ট্যাডিজের শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম ও শেখ তানজির আহমেদ। জানানো হয়, সাতক্ষীরার ৬০০ কৃষকের ওপর পরিচালিত ওই গবেষণায় উত্তরদাতাদের মধ্যে ৯৮ দশমিক ৩৪ ভাগ কীটনাশক ব্যবহার করেন। এর মধ্যে ৬১ দশমিক ৫৩ ভাগ কৃষক ক্যান্সার, লিভারের সমস্যা, ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত। কীটনাশক স্প্রে করার পরই হাত বা শরীর না ধুয়ে খাবার খেয়ে, পানি দূষণের মাধ্যমে, প্রতিবেশির ব্যবহূত কীটনাশক থেকে ও গ্রাউন্ড স্প্রেসহ নানাভাবে এরা আক্রান্ত হন। এছাড়া স্প্রে যন্ত্র ও শরীর পুকুর, ডোবায় ধোয়ার মাধ্যমেও বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ধ্বংস হচ্ছে জলজ সম্পদ ও জীববৈচিত্র্য। গবেষণায় জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় ছয় দফা সুপারিশ করা হয়। এগুলো হলো- কীটনাশক ক্রয়, ব্যবহার, সংরক্ষণ বা নষ্ট করার সময় ব্যক্তিগত সাবধানতার পাশাপাশি পরিবেশ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি, কীটনাশকের পাত্র অন্য কাজে ব্যবহার না করে পরিবেশসম্মত উপায়ে নষ্ট করা, কীটনাশক যাতে কৃষি ছাড়া অন্য কাজে ব্যবহার করা না হয় সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন করা, ভেজাল ও নিম্নমানের কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ করা, নিবন্ধিত পরিবেশক ছাড়া অন্য কেউ যাতে কীটনাশক বিক্রি করতে না পারে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো এবং উৎপাদনকারী, ভোক্তা ও কৃষি বিভাগের সমন্বিত প্রচেষ্টায় কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে মাটির ক্ষতি ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা। পরে লোকজের নির্বাহী পরিচালক দেব প্রসাদ সরকারের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল বারী, আনিছুর রহিম, সুভাষ চৌধুরী, আবদুল ওয়াজেদ কচি প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর