রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

সীমান্ত দিয়ে আসছে গরু পথে পথে চাঁদাবাজি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে ১৯৫ কিলোমিটার সীমান্ত দিয়ে আসছে হাজার হাজার ভারতীয় গরু। গরু পার করতে সাত শতাধিক লোক নিয়োজিত রয়েছে সীমান্তজুড়ে। স্থানীয় ভাষায় এদের ডাংগোয়ল বলে। সীমান্ত হয়ে আসা এ গরু ঘিরে চলছে ব্যাপক চাঁদাবাজি। সরকারদলীয় নেতা, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বর, গ্রামপুলিশ, ভিডিপি কমান্ডারসহ স্থানীয় প্রশাসনের দালালরা গরুপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা চাঁদা নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া লাইনম্যানরা গরুপ্রতি করিডোর ফি ৫০০ টাকা ফাঁকি দিয়ে ভাগাভাগি করছেন।

জানা যায়, দহগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় কোনো কাঁটা তারের বেড়া না থাকায় প্রতিদিন ডাংগোয়ালরা অবৈধ পথে যে গরু আনছে তা কেন্দ্র করে বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছে একটি চক্র। এছাড়া ভারত থেকে আনা গরু তিনবিঘা করিডোর দিয়ে পার করার সময় ২০ টাকা করে নেওয়ার বিধান থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ৬০ টাকা। জেলার পশু হাটগুলোতে বেড়েছে দালালদের তৎপরতা। দালাল ছাড়া গরু ও ছাগল বিক্রি করা যাচ্ছে না। একটি পশু বিক্রি হওয়ার পর দালালরা ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছ থেকে জোর করে ১০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করছে। দালালদের মাধ্যমে পশু বিক্রি না করলে বিক্রেতাদের হয়রানি করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।

পশুবাহী ট্রাক, নছিমন, ভটভটি চালকরা জানান, পুলিশ বক্সের সদস্য, ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন ও সরকারদলীয় লোকজন জেলার বাইরে থেকে আসা গরুবোঝাই যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করছে। এছাড়া কিছু লোক সীমান্ত পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে করিডোর ও বিনা করিডোরে আনা গরু থেকে চাঁদা তুলছে। গরুবোঝাই এক ট্রাকচালক জানান, তিনি পাটগ্রাম হাট থেকে গরু নিয়ে বের হতেই পুলিশ গাড়ি থামাতে বলে। থামালে কাগজপত্র দেখতে চান। কাগজপত্র বের করে দিলে তা না দেখেই সেটি হাতে করে অন্য গাড়ির কাছে চলে যান। পরের গাড়িচালকেরা অবস্থা বুঝে কাগজপত্র আর বের না করে সোজা টাকা ধরিয়ে দিয়ে চলে যান। গরু কিনতে আসা মনির নামে এক ব্যক্তি জানান, তিনি বড়খাতা হাটে গরু কিনতে এসেছিলেন। দালালের কারণে দুই দিন ঘুরেও গরু কিনতে পারেননি। ক্রেতা কোনো পশুর দাম জানতে চাইলেই দালালরা এক জোট হয়ে সেই পশুর দাম দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। লালমনিরহাট পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক বলেন, ‘ভুক্তভোগী কেউ লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় আমরা ব্যবস্থা নিতে পারছি না।’

 

সর্বশেষ খবর