শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঘরে ঢুকে কাউন্সিলরের ওপর হামলা, জেলাজুড়ে তোলপাড়

যুবলীগ-বিএনপি পাল্টাপাল্টি বিবৃতি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

‘দুর্বৃত্তদের’ হামলায় গত শুক্রবার রাতে মৌলভীবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরীসহ একই পরিবারের পাঁচজন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় এখনো গ্রেফতার নেই। ঘটনার পরদিন জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সুমনকে দায়ী করে স্বাগত দাসের স্ত্রী জোনাকী দেব বাদী হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি মামলা করেছিলেন (নম্বর ২২/১৭)। মামলায় সুমনকে ১ নম্বর আসামি করে আরও ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সপ্তাহ গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বিএনপির অনেকেই বিষয়টিকে দলীয় ইস্যু হিসেবে দেখছেন। সাধারণ মানুষ বলছে, এটি ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে ঘটনা। জেলা আওয়ামী লীগ বলছে, বিষয়টির সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। সন্ধ্যারাতে একজনের বাসায় হত্যার উদ্দেশ্যে এমন হামলার ঘটনায় শহরবাসীও শঙ্কিত। ঘটনাটি জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সুমনের সঙ্গে কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাসের ব্যবসাসংক্রান্ত লেনদেন নিয়ে বিরোধ চলছিল। তবে একে যুবলীগ সন্ত্রাসীদের হামলা উল্লেখ করে সোমবার পৃথকভাবে জেলা বিএনপি সভাপতি এম নাছের রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান দলীয় প্যাডে বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক স্বাগত কিশোর দাসকে তারই বাসার ভিতরে স্বজনদের সামনে যুবলীগ সন্ত্রাসীরা অমানবিক ও পৈশাচিক যে আক্রমণ করেছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’ তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান বাবুল বলেন, ‘একজন কাউন্সিলর সন্ত্রাসীদের দ্বারা নিজ ঘরে হামলার শিকার হওয়ার ঘটনাটি আসলেই দুঃখজনক। কিন্তু এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মিথ্যাচারের গন্ধ ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। জেলা যুবলীগ সভাপতি মো. নাহিদ আহমদ দাবি করেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে যুবলীগের কোনো সম্পৃত্ততা নেই।’ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নেছার আহমদ বলেন, ‘এটি রাজনৈতিক হামলা নয়।’ মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সুহেল আহমদ বলেন, ‘মামলায় আসামিদের পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ না করায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।’ হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’ এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন মৌলভীবাজার, কুলাউড়া ও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার কাউন্সিলর এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা প্রকৃত হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর