নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের ৭ মে। ওই দিন ব্যালট পেপার ও ভোট বাক্স ছিনতাই ও সংঘর্ষের কারণে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৩ জুুলাই পুনর্নির্বাচন হয়। চেয়ারম্যান পদে জাফর ইকবাল মানিক বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ঋণখেলাপি মামলা থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ফারুকুল ইসলাম ফারুক গেজেট প্রকাশে স্থগিতাদেশ চেয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেন। একই সঙ্গে আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন। আবেদনের পরিপ্র্রেক্ষিতে আদালত বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশনকে রুল জারি করে। কিন্তু এরই মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হয়। এরপর নতুন করে শুরু হয় দাঙ্গা-হাঙ্গামা। ভাঙচুর করা হয় অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর। এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন গ্রামবাসী। অভিযোগ উঠেছে তথ্য গোপন করে নির্বাচনে অংশ নেন জাফর ইকবাল মানিক। তিনি ২০১২ সালের জুলাই মাসে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আল মোতালিব ট্রেডার্সের নামে স্থানীয় ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ১২ লাখ টাকা ঋণ নেন। সঠিক সময়ে ঋণ শোধ না করায় ব্যাংক তাকে ঋণখেলাপি ঘোষণা করে আদালতে মামলা করে। চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়া প্রার্থী মো. ফারুকুল ইসলাম ফারুক বলেন, মানিক ঋণখেলাপি। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী তিনি ডিসকোয়ালিফাই। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আমি বিজয়ী।
মামলার বাদী ব্র্যাক ব্যাংক ম্যানেজার সাইদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, জাফর ইকবাল মানিক ব্যাংক থেকে ১২ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। ব্যাংক এখনো ৫ লাখ ছয় হাজার ৩১২ টাকা পায়। ২০১৫ সালে ব্যাংক তাকে ঋণখেলাপি ঘোষণা করে। রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু রেজা মুহাম্মদ দেলোয়ারুল হক বলেন, ঋণখেলাপি হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বৈধ নয়। সে অনুযায়ী তার প্রার্থিতা বাতিল হবে। এখন বিষয়টি কমিশন ও আদালত সিদ্ধান্ত দেবে। এদিকে নির্বাচনের জটিলতা না কাটায় উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে দাঙ্গা-হাঙ্গামা লেগেই আছে। এরই জেরে সম্প্রতি বিজয়ী চেয়ারম্যানের সমর্থকরা প্রতিদ্বন্দ্বী সমর্থকদের অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর চালায়। আহত হয় বেশ কয়েকজন। এ নিয়ে রায়পুরা থানায় মামলা হয়েছে। এর আগে বিজয়ী চেয়ারম্যানের গুলিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থক জিয়াউর রহমান জিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।