মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

টেঁটাযুদ্ধে অংশ না নেওয়ায় গ্রামে হামলা আগুন লুট

আবারও উত্তপ্ত রায়পুরার চরাঞ্চল

নরসিংদী প্রতিনিধি

আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রায়পুরার চরাঞ্চল। এবার পার্শ্ববর্তী গ্রামের লোকজনের সঙ্গে টেঁটাযুদ্ধে অংশ না নেওয়ায় একটি গ্রামে হামলা হয়েছে। এ সময় ভাঙচুর, লুটপাট আর অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ও দোকানে। এ ঘটনার পর গত শনিবার থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে চলে সংঘর্ষ। সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা ও পাল্টা হামলা হয়েছে মির্জারচর ও চরমধুয়া ইউনিয়নে। জানা যায়, রায়পুরা উপজেলার নীলক্ষ্যা, বাঁশগাড়ী, মির্জাচর, চরমধুয়া গ্রামগুলোতো পান থেকে চুন খসলেই হাজার হাজার গ্রামবাসী টেঁটাযুদ্ধে নেমে পড়েন। গত দুই বছরে টেঁটাযুদ্ধে এ সব গ্রামের ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার। গেল ইউপি নির্বাচনের পর থেকে বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হক ও সাবেক চেয়ারম্যান শাহেদ সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এর জেরে কয়েকবার হামলা, সংঘর্ষ হয়। এ সব সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দলভারী করতে সাবেক চেয়ারম্যান শাহেদ সরকারের সমর্থকরা চরমধুয়া গ্রামের লোকজনের কাছে সহায়তা চান। কিন্তু চরমধুয়া গ্রামের লোকজন তাদের হয়ে টেঁটাযুদ্ধে অংশ নিতে অসন্মতি জানান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাতের আঁধারে শাহেদ সমর্থকরা চরমধুয়া গ্রামে হামলা চালিয়ে অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও  ভাঙচুর করে। লুট করে স্থানীয় বাজারের ৪০টি দোকানের মালামাল। ছিনিয়ে নেয় নারীদের কান গলা থেকে স্বর্ণালঙ্কার। হামলার শিকার গরুর খামারি আহসান শিকদার জানান, শনিবার গভীর রাতে পাঁচ-ছয়শ লোক দেশি অস্ত্র ও পিস্তল নিয়ে, ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আমার খামার থেকে ৪০টি গরু নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। তাদের পিস্তলের গুলিতে আহত হয়ে তার দুই কর্মচারী নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চরমধুয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী নীলক্ষ্যা ও বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন টেঁটাযুদ্ধপ্রবণ এলাকা। টেঁটাযুদ্ধে চরমধুয়াবাসীর সমর্থন ও অংশগ্রহণ চেয়েছিল তারা। অংশ না নেওয়ায় গ্রামে তাণ্ডব চালায়। এছাড়া মির্জারচর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া ও বালুচর গ্রামে তিন শতাধিক বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। হামলা চলাকালে উভয়পক্ষের ১০ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ইকবাল (৩০) ও রজব আলী (২৮) নামে দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। রায়পুরা থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘটনা তেমন কিছু না। সামান্য ভাঙচুর হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শফিউর রহমান বলেন, রবিবার বিকালে চরমধুয়া গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

সর্বশেষ খবর