সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জীবন যুদ্ধে হার মানতে চান না আশরাফুল

মাহবুবুর রহমান, শ্রীপুর

জীবন যুদ্ধে হার মানতে চান না আশরাফুল

পক্ষাঘাতগ্রস্ত আশরাফুল —বাংলাদেশ প্রতিদিন

যতই দিন যাচ্ছে ততই আশরাফুলের শারীরিক গঠন ছোট হয়ে আসছে। ১৯৮৭ সালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করা আশরাফুলের বাবা রতন মিয়া দিনমজুর। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি বড়। আশরাফুল অন্য আট-দশজনের মতো সুস্থ-স্বাভাবিক ছিলেন। চলাফেরা, খেলা-ধুলা সবই করতে পারতেন। লেখাপড়াও ভালই চলছিল তার। ২০০৩ সালে এসএসসির ফরম পূরণের পর পরীক্ষার কয়েক দিন আগে রিকেটস রোগে আক্রান্ত হয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এতে তার এক পা শুকিয়ে যায়। এর পর ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে এক পা ও এক হাত ভেঙে যায়।

আশরাফুলের বয়স এখন ৩০ বছর। ২০০৫ সালে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার রেখা আক্তারকে বিয়ে করেন। ইতোমধ্যে দুই সন্তানের বাবা হয়েছেন। বড় মেয়ে বাড়ির পাশে কিন্ডার গার্টেনে লেখাপড়া করে। সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে গত পাঁচ বছর আগে নিজের ঘরের ভিতরেই ছোট্ট দোকান খুলে বসেছেন। দোকান থেকে দিন শেষে যা আয় হয় তা দিয়ে এখন আর আগের মতো সংসার চলে না।  আশরাফুলের স্ত্রী রেখা আকতার জানান, সংসারের খরচ মেটাতে তিনি সম্প্রতি কারখানায় শ্রমিকের কাজ নিয়েছেন।

বাবা রতন মিয়া জানান, আশরাফুল ছোটবেলা থেকেই ছিল মেধাবী। লেখাপড়ার প্রতি তার অন্যরকম নেশা ছিল। কিন্তু হঠাৎ রোগে আক্রান্ত হয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে।  আশরাফুলের মা রাফেজা আক্তার জানান, আশরাফুলের চলাচল করার জন্য একটি হুইল চেয়ার জোগাড়ের অনেক চেষ্টা করছি কিন্তু তা জোগাড় করতে পারিনি। হুইল চেয়ার না থাকায় তার চলাফেরা খুব কষ্ট হয়। গত ১০ বছর ধরে অসুস্থ হয়ে দিন দিন শরীরের গঠন ছোট হয়ে আসছে। অর্থের অভাবে ভাল চিকিৎসা নিতে পারছি না। আশরাফুল বলেন— শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আমার সব স্বপ্নই ধুলায় মিশে গেছে। এখন সন্তানদের নিয়েই স্বপ্ন দেখি।

সর্বশেষ খবর