সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

দুই যুগেও হয়নি একাডেমিক ভবন, মাঠে চলে পাঠদান

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

দুই যুগেও হয়নি একাডেমিক ভবন, মাঠে চলে পাঠদান

প্রামাণিকপাড়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়। দুই যুগেও এর একাডেমিক ভবন নির্মাণ না হওয়ায় মাঠে করা হচ্ছে পাঠদান —বাংলাদেশ প্রতিদিন

বয়স দুই যুগ পেরোলেও পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার প্রামাণিকপাড়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে এখনো একাডেমিক ভবন হয়নি। মেলেনি সরকারি অনুদানও। ফলে শ্রেণিকক্ষ সংকটে মাঠেই চলছে পাঠদান।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য কমনরুমও নেই, নেই স্যানিটেশন ব্যবস্থাও। এসব কারণে শিক্ষক-অভিভাবকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে হতাশা। জানা গেছে, এলাকাবাসী ও বেকার যুবকদের উদ্যোগে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রামাণিকপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। স্থানীয় গণ্যমান্যদের অনুদান এবং প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষকদের টাকায় ৬ কক্ষবিশিষ্ট ইট ও টিন দিয়ে নির্মাণ করা হয় দুটি ভবন। সেই থেকে আজ অবধি এ দুটি ভবন দিয়েই চলছে বিদ্যালয়। ১৯৯৫ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ শুরু করে। কিন্তু এতদিনেও বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর কোনো উন্নয়ন হয়নি। শ্রেণিকক্ষের অভাবে তাই মাঠেই চালাতে হচ্ছে পাঠদান। বিদ্যালয়টি পৌরসভার ভিতরে একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশেই গড়ে ওঠায় মাঠে বসে পাঠ নিতে শিক্ষার্থীদের মনোযোগের ব্যাঘাত ঘটে। ফলে পড়াশোনায় ভালো করার ইচ্ছা থাকলেও পরিবেশের কারণে ভালো ফলাফল করতে পারছে না তারা। বর্ষা মৌসুমে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়। এ সময় মাঠে থাকে হাঁটু সমান কাঁদা। শুধু শ্রেণিকক্ষের সংকট নয়, শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে তাদের বিজ্ঞানাগারও গড়ে ওঠেনি। নেই লাইব্রেরি, নেই ভালো মানের বইপত্র। ক্যান্টিনের অভাবে তাদের স্কুল ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে খাবার খেতে হয়। অন্যদিকে অধিকাংশ নারী শিক্ষার্থী দূর-দূরান্ত থেকে সাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে আসে। কিন্তু তাদের বিশ্রামের ব্যবস্থা নেই। নেই টয়লেট ব্যবস্থা। তাই আশপাশের বাড়িতে সারতে হয় প্রাতঃকর্ম।

অভিভাবক কাজিমুল ইসলাম বলেন, ‘আমার এক ছেলে এক মেয়ে এই বিদ্যালয়ে পড়ে। রোদের দিনে তারা যেতে চায় না। কারণ তাদের মাঠে ক্লাস করতে হয়। তাদের ভালো মেধা থাকা সত্ত্বেও পরিবেশের কারণে ভালো রেজাল্ট করতে পারছে না। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি শঙ্কিত।’ এই বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও শিক্ষকরা হতাশা ব্যক্ত করে জানান, কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আবেদন করেও লাভ হয়নি। এমনকি স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছ থেকেও সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।  প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন জানান, সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবরে ওই এমপির কাছে অনুদানের আশায় দেখা করতে যান বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবক সদস্যরা। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দেন, অনুদান পেতে হলে ওই বিদ্যালয়ের সয়েল টেস্ট করতে হবে। তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সর্বশেষ খবর