বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

দুই বাংলার মিলন বেনাপোল-হিলিতে

বেনাপোল প্রতিনিধি

দুই বাংলার মিলন বেনাপোল-হিলিতে

ভাষার টান আটকাতে পারেনি সীমান্তের কাঁটাতার। এ তার উপেক্ষা করে গতকাল অমর একুশের দিন দুই বাংলার মিলনমেলা জমেছিল বেনাপোল সীমান্তে। এ সময় হাজার হাজার ভাষাপ্রেমী মানুষের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে, ‘আমরা বাঙালি, এ আমাদের অহংকার, কাঁটাতারের বেড়া আমাদের আটকাতে পারবে না, আমাদের বন্ধনে কোনো বাধা কাজ করবে না।’ ভৌগোলিক সীমারেখা ভুলে কেবল ভাষার টানে এদিন সকালে দলে দলে মানুষ যোগ দেয় নো-ম্যান্স-ল্যান্ডে আয়োজিত একুশের মিলনমেলায়। এখানে নির্মিত অস্থায়ী শহীদবেদিতে সকাল ৯টায় প্রথম ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, পীযূষকান্তি ভট্টাচার্য্য, বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সহসম্পাদক আবদুল মজিদ, বেনাপোল বন্দরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র সেন। ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁও অঞ্চলের সাংসদ মমতা ঠাকুর, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সভাধিপতি রহিমা মণ্ডল, বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বনগাঁও পৌরসভার মেয়র শংকর আঢ্য, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোপাল ব্যানার্জি। বেনাপোল ও বনগাঁও পৌরসভা এ মিলনমেলার আয়োজন করে। অভিনয়শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, সংগীতশিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়, ফাতেমাতুজ্জোহরা, ভারতের শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ও অনুপম রায় মিলনমেলায় অংশ নিয়ে আলোচনা, সংগীত ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন।

হিলি : দিনাজপুরের হিলিতে দুই বাংলার যৌথ উদ্যোগে পালিত হয়েছে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর তিওরের উজ্জীবন সোসাইটি ও বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের যৌথ আয়োজনে এবং হাকিমপুর পৌরসভা, উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সব সহযোগী সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমান্ড, সাপ্তাহিক আলোকিত সীমান্ত, হিলি স্থলবন্দর উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সহযোগিতায় হিলি সীমান্তের শূন্যরেখার পাশে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।

সকাল ১০টায় ভারতের উজ্জীবন সোসাইটির সম্পাদক সুরজ দাস ও বালুরঘাট হিলি টু মেঘালয় করিডোর কমিটির আহ্বায়ক নবকুমার দাশের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল হিলি সীমান্তের শূন্যরেখায় আসেন। এসময় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলী ও পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত তাদের শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের প্রত্যেককে উত্তরীয় পরিয়ে দেন। এ সময় সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১১টার দিকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পরে সীমান্তের শূন্যরেখার পাশে মুক্তিযোদ্ধা স্কয়ারে নির্মিত মঞ্চের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখানে অস্থায়ী শহীদ মিনারে বাংলাদেশ ও ভারত থেকে আসা অতিথিরা যৌথভাবে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানান। পরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। বিপুল দর্শক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে হিলি সীমান্তে দুই পাশেই বিপুল বাংলা ভাষাভাষী মানুষ ভিড় জমান। তবে সীমান্তরক্ষীদের বাধায় তারা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি।

সর্বশেষ খবর