সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চিকিৎসা কার্যক্রম পাঁচ বছর ধরে বন্ধ অস্ত্রোপচার

সরাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের চার লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। কিন্তু দুর্নীতি, লোকবল ও যন্ত্রপাতি সংকট এবং অবকাঠামোর অভাবে খুঁড়িয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫ জন চিকিৎসকের স্থলে কাগজপত্রে ১৮ কর্মরত আছেন। তাদের মধ্যে প্রেষণে, প্রশিক্ষণে ও ছুটিতে রয়েছেন ১৩ জন। ২৪ জন সেবিকার জায়গায় আছেন ১৭ জন। আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও), চক্ষ, দন্ত, নাক-কান-গলা, হৃদরোগ, মেডিসিন, শৈল্য, স্ত্রীরোগ, হাঁড়, অবেদনবিদ ও শিশুরোগ কনসালট্যান্ট নেই। একটি আধুনিক ওটি ও ব্লাড ব্যাংক থাকলেও অবেদনবিদের অভাবে পাঁচ বছর ধরে অস্ত্রোপচার হচ্ছে না। নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে অস্ত্রোপচার কক্ষের যন্ত্রপাতি। ৪২-৪৩ বছরের পুরনো এক্স-রে যন্ত্রটি বছরের অধিকাংশ সময় বিকল থাকে। নেই আলট্রাসনোগ্রাম যন্ত্র। ফলে সারা বছর দরিদ্র রোগীদের অধিক টাকায় প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে রোগ নির্ণয় করতে হচ্ছে। ১১ বছর ধরে অ্যাম্বুলেন্স ছিল না। গত ২ জানুয়ারি অর্ধকোটি টাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্স যুক্ত হলেও কাগজপত্রের অভাবে এর চাকা ঘুরছে না। কাগজপত্রে ৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও বাস্তবে শয্যা ৩৮টি। শয্যার অভাবে প্রায়ই রোগীদের মেঝে বা বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হয়। নেই বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা। দালালের দৌরাত্ম্য তো আছেই। একদিকে নতুন আবাসিক ভবনগুলো খালি পড়ে আছে। অন্যদিকে পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। ভর্তি রোগীদের কক্ষগুলোর দরজা-জানালা ভাঙা। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। বিকল বৈদ্যুতিক পাখাগুলো। শৌচাগারের অবস্থা আরও শোচনীয়। হাসপাতালের প্রধান ফটকের পাশে গড়ে উঠেছে ৮-১০টি অবৈধ স্থাপনা। এ সব স্থপনার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পণ্য উঠা-নামার সময় হাসপাতালে রোগীর প্রবেশ দায় হয়ে পড়ে। তাছাড়া প্রধান ফটকে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে জলাবদ্ধতার সমস্যা। ভেঙে পড়েছে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সন্ধ্যার পর আবাসিক এলাকা থাকে মাদকসেবী আর বিক্রেতাদের দখলে। সিনিয়র নার্স কামরুন্নাহার বলেন, ‘বাসার আশপাশে দিনে-রাতে বখাটেরা মাদক সেবন করে। কিছু বললেই ধমক দেয়। আমরা ভয়ে বসবাস করি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কাজী আইনুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’

 

সর্বশেষ খবর