রবিবার, ১১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

দিনে কাজ রাতে শেকলবন্দী!

ডামুড্যায় ভাটা শ্রমিকদের মানবেতর জীবন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

দিনে কাজ রাতে শেকলবন্দী!

লেবার সরদার পালিয়ে যাওয়ার অজুহাতে শরীয়তপুরের ডামুড্যার একটি ইটভাটায় শিশুসহ ২১ শ্রমিককে জিম্মি করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত দু্ই মাস ধরে বেতন না দিয়ে এ সব শ্রমিককে একটি ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করে কাজ করতে বাধ্য করারও অভিযোগ রয়েছে ভাটামালিকদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সংবাদকর্মীরা শুক্রবার ঘটনাস্থলে গেলে ভাটায় কর্মরত শ্রমিকরা তাদের দুর্বিষহ জীবনের কথা তুলে ধরেন। নির্যাতনের বিষয় অস্বীকার করে ভাটামালিকরা জানান, চুক্তি অনুযায়ী লেবার সরদারের মাধ্যমে দাদনের টাকায় শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। শ্রমিকরা জানান, গত নভেম্বর মাসের শেষ দিকে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা থেকে ইটভাটায় কাজের জন্য স্ত্রী-শিশু সন্তানসহ ২১ জন শ্রমিক শরীয়তপুরে আসেন। তারা ডামুড্যা উপজেলার বড় শিধুলকুড়া গ্রামের মেসার্স এইচ. কে. ব্রিকসে কাজ নেন। চুক্তি অনুযায়ী ভাটার তিন সরদার— মোতালেব, খলিল ও জাহাঙ্গীর এই শ্রমিকদের জনপ্রতি ৪০ হাজার টাকা দাদন দেবে বলে আশ্বাস দিলে কাজ শুরু করেন তারা। ডিসেম্বর মাসে শ্রমিকরা দাদনের টাকা না পেয়ে সরদারদের চাপ দেয়। একপর্যায়ে ওই তিন সরদার মালিকদের কাজ থেকে দাদনের টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। সরদার পালিয়ে যাওয়ার অজুহাতে দুই মাস ধরে ইটভাটার মালিকদের কাছে অসহায় হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। তাদের অভিযোগ, ভাটার দুই মালিকের হুকুমে শ্রমিকদের রাতে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। সারাদিন কাজ শেষে টাকা চাইলেও মারধর করে। এছাড়া শ্রমিকদের টাকা ও তিন বেলা খাবার না দিয়ে তাদের স্ত্রী-সন্তানদেরও ইট তৈরির কাজে বাধ্য করা হচ্ছে। ভাটা ম্যানেজার আলম বেপারি শ্রমিকদের আটকে রাখার কথা অস্বীকার করেছেন। শ্রমিকদের আটকে রাখা মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে জানান, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের শরীয়তপুরের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদুর রহমান মাসুদ। এ সব শ্রমিকের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর