শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

হুমকিতে নদীবন্দরসহ ১০ কি.মি এলাকার স্থাপনা

মেঘনার ভাঙন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মেঘনা নদীর গতিপথ বদলে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দর ও সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের ১০ কিলোমিটার এলাকার স্থাপনা। এরই মধ্যে দুই কিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় তিন শতাধিক বাড়ি-ঘর, ১৯টিরও বেশি চাতালকল। অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও বিভিন্ন স্থানে চর জেগে ওঠায় ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। আগামী বর্ষার আগে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে ভাঙনের মাত্রা আরও বাড়বে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। মেঘনার তীর ঘেঁষে উঠেছে শত বছরের পুরনো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দর। ২০০৭ সালে এ বন্দরটি পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক নদীবন্দর হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সরকার। ২০১৬ সালে এ বন্দরটিকে ভারত-বাংলাদেশ ট্রান্সশিপমেন্ট কেন্দ্র হিসেবে উদ্বোধন করা হয়। আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে সরাইলের পানিশ্বর পর্যন্ত মেঘনার তীর ঘেঁষে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে বিদ্যুৎ কেন্দ , সার কারখানা, গ্যাস কম্প্রেসার কেন্দ্র, ছোট-বড় অসংখ্য চাতালকল, বহুতল ভবনসহ নানা স্থাপনা। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং, অসংখ্য ডুবো চরের কারণে মেঘনা নদীর গতিপথ বদলে যায় ভাঙনের কবলে পড়েছে আশুগঞ্জ উপজেলার চর সোনরামপুর ও সরাইল উপজেলার পানিশ্বর এলাকার বাড়ি-ঘর ও চাতালকল। এরমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়ে পানিশ্বরের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ঘর-বাড়ি ছাড়া হয়েছেন অন্তত ৩ শতাধিক পরিবার ও ১৯টি চাতালকল। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছেন চর সোনারামপুরের একাংশ। গত ৩ বছরের মেঘনার তীরের অন্তত ২ কিলোমিটার এলাকার স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত শত কোটি টাকার সম্পদ। অব্যাহত ভাঙনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে নদীর তীরে গড়ে ওঠা আশুগঞ্জ নদীবন্দরে বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সার কারখানা, গ্যাস কম্প্রেসার স্টেশন, ছোট-বড় অংসখ্য চাতালকল, বহুতল ভবনসহ নানা স্থাপনা। আর সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের মানুষের ঘর-বাড়ি, চাতালকল, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা।

স্থানীয়রা বলছেন, ভাঙন অব্যাহত থাকলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে শত শত কোটি টাকার সম্পদ। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে আরও ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়েছেন আশুগঞ্জ নদীবন্দরের ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রতিনিধিদল ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। প্রতিনিধি দলের প্রধান পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কায়ছার জানিয়েছেন, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং, অসংখ্য ডুবোচরের কারণে মেঘনা নদীর গতিপথ বদলে গিয়ে ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা জানিয়েছেন, দ্রুত বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর