শুক্রবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

‘ব্লাস্টে’ মাথায় হাত বোরো চাষিদের

প্রতিদিন ডেস্ক

সাতক্ষীরা, গাজীপুরের শ্রীপুর এবং ময়মনসিংহের ফুলপুর-হালুয়াঘাটে বোরো খেতে ছড়িয়ে পড়েছে ব্লাস্ট রোগ। ফলে চিটা হয়ে গেছে বেশির ভাগ ধান। কষ্টের ফসল ঘরে তোলার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে এ রোগ দেখা দেওয়ায় দিশাহারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

সাতক্ষীরা : এ বছর সাতক্ষীরায় বোরোর বাম্পার ফলন আশা করেছিলেন চাষিরা। কিন্তু ব্লাস্টের কারণে ধান চিটা হয়ে যাওয়ায় তারা হতাশাগ্রস্ত। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ৭৪ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৫০ হেক্টর বেশি। ব্লাস্ট রোগের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ। কলারোয়া উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের চাষি নূর হোসেন জানান, জমি চাষ, বীজ, সার, সেচ, কীটনাশক ও শ্রমিকদের মজুরি বাবদ বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ৫২ হাজার টাকা খরচ হলেও ১০ হাজার টাকার ধানও পাবেন না। তালা উপজেলার সদর ইউপি চেয়াম্যান সরদার জাকির জানান, প্রায় এক মাস আগে কপোতাক্ষ নদের দুই তীরের ধান খেতে ব্লাস্টের আক্রমণ দেখা দেয়। বিষয়টি ইউনিয়ন সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে জানালেও কাজ হয়নি। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবদুল মান্নান জানান, ব্লাস্ট ছত্রাকজনিত রোগ। ধানে দানা বাঁধা শুরু হলে এই রোগ দেখা দেয়। কৃষকদের ছত্রাকনাশক স্প্রে, জমিতে পানি ধরে রাখা ও কখনো ইউরিয়া ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

শ্রীপুর : গাজীপুরের শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বোরো খেতে এ বছর ব্লাস্ট রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে উপজেলার বেশির ভাগ জায়গায় ফলন না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। টেংরা গ্রামের আলতাফ মাহমুদ বলেন, গত বছর প্রতি একরে ৬০ মণ ধান পেয়েছিলেন। এবার ছয় মণও পাবেন না। সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান একই গ্রামের সাহাজ উদ্দিন। পটকা গ্রামের হামিদল ও মাসুম আরমান জানান, ধান মরে পুরো জমি সাদা হয়ে গেছে। প্রতিদিন কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশে নানা জাতের ওষুধ ছিটালেও কাজে আসছে না। কষ্টের ফসল হারিয়ে একইভাবে হতাশার কথা জানিয়েছেন উপজেলার অনেক বোরো চাষি। শ্রীপুর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সাইদ বলেন, ‘আর্দ্র আবহাওয়ায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। জমিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বেশি হলেও এর আক্রমণ ঘটে।’

ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের ফুলপুরে এবার বোরোর ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিলেও হঠাৎ ব্লাস্টের প্রাদুর্ভাবে হতাশ কৃষকরা। কেউ জমানো টাকা ও ধান-চাল বিক্রি করে কেউ আবার ব্যাংক ও উচ্চ হারে দাদন ব্যসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বোরো আবাদ করে এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুকল্প দাস বলেন, ‘সব ইউনিয়ন থেকে ব্লাস্ট রোগে আক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমরা এর প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছি।’ এছাড়া ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে ব্লাস্ট (ধানের শীষ মরা রোগে) আক্রান্ত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। উচ্চ ফলনশীল ব্রি-ধান ২৬ ও ব্রি-ধান ২৮ জাতে এ রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা দিয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর