সোমবার, ১৪ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

হাসি নেই বোরো চাষিদের মুখে

অসময়ের বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে ধান, অতিরিক্ত টাকা দিয়েও মিলছে না শ্রমিক

প্রতিদিন ডেস্ক

‘কনকনা ঠাণ্ডাত আর শরীল পানি করি হামরা খালি ধান আবাদ করি। অসময়ে পানিতে ধানের ক্ষতি, তার ধান কাটা মানুষ পাওয়া যাওছে না। ক্যাংকা (কিভাবে) করি হারা ধান আবাদ করমো।’ কথাগুলো বলছিলেন বদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের কৃষক এমারুল হক। শুধু বদরগঞ্জ নয়, একই সংকটে দেশের বিভিন্ন স্থানের বোরোচাষীরা। চলতি বছর বোরোর ভালো ফলনে কৃষক লাভের আশায় বুক বাঁধলেও অসময়ের ভারী বর্ষণ ও ধান কৃষি শ্রমিক সংকটে আশাহত তারা। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের খবর— বগুড়া : বৈরী আবহাওয়ায় ধান নষ্ট হওয়ার আতঙ্কে শেরপুর উপজেলার অনেক চাষি আধপাকা ধান কাটা শুরু করলে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। ফলে কষ্টের ফসল ঘরে তোলা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই কৃষকদের। যাও ধান কাটা যাচ্ছে তা ভালো পাকা না হওয়া বিক্রি করতে হচ্ছে কম দামে। শেরপুর কৃষি অফিস জানায়, বিগত বছরের চেয়ে এবার বোরোর ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু শেষ সময়ে বৈরী আবহাওয়া ও শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়ায় চিন্তিত কৃষক। সাধুবাড়ী গ্রামের কৃষক শহিদুল ও গোলাম রব্বানী জানান, বৈশাখের শুরু থেকে আবহাওয়া ভালো যাচ্ছে না। প্রায় দিনই ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। ভয়ে আধপাকা ধান কাটা শুরু করেছেন। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছেন তারা।  দিনাজপুর : জেলার বিভিন্ন এলাকায় ইরি-বোরো ধান ঘরে তোলা শুরু হলেও বৃষ্টি ও শ্রমিক সংকটে নতুন ধান উঠার আনন্দ হতাশায় পরিণত হয়েছে। বৃষ্টির কারণে একদিকে যেমন ধানের ক্ষতি হচ্ছে অন্যদিকে শ্রমিক-মাড়াই খরচ বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক। ফুলবাড়ী উপজেলার নারায়ণপুর, লক্ষ্মীপুর, মহাদীপুর, আদর্শগ্রাম, গড়পিংলাই, জয়নগর, বারাই পাড়াসহ ১২টি গ্রামে বৃষ্টির পানিতে ৮০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। ফুলবাড়ী কৃষি কর্মকর্তা হামীম আশরাফ বলেন, বৈরী অবহাওয়ার কারণে শ্রমিক পেতে সমস্যা হচ্ছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে এ সমস্যা থাকবে না। বদরগঞ্জ : উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অসময়ের বৃষ্টিতে পাকা ধান খেতে পানি জমে গেছে। কোথাও পানিতে ন্যুইয়ে পড়েছে ধান গাছ। প্রায় সব জমির ধান কাটার উপযুক্ত হলেও শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকরা তা কাটতে পারছেন না। গোপিনাথপুর ইউনিয়নের কৃষক সাহাবুল ইসলাম জানান, শিলাবৃষ্টিতে এমনিতেই ধানের ক্ষতি হয়েছে তার উপর বেশি মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।

পাকা ধান নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। রামনাথপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন প্রামাণিক বলেন, ‘আমার ৩০ বিঘা জমির ধান শ্রমিকের অভাবে কাটতে পারছি না। জানি না কি হবে?’

সর্বশেষ খবর