মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

কলাপাতায় ঈদ আনন্দ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

কলাপাতায় ঈদ আনন্দ

অন্তত ২০০ বছরের ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভাটিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। মুন্সী বংশের এসব গ্রামবাসী ঈদের নামাজ শেষে একসঙ্গে দল বেঁধে সবার বাড়িতেই ঈদের খাবার খেতে যান। আর এসব খাবার খান কলার পাতায় করে। সে ধনী বা দরিদ্র হোক না কেন। এভাবে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তারা ধরে রেখেছেন বছরের পর বছর।

কলাপাতায় করে ঈদের খাবার খাওয়া, তাও আবার গ্রামের একেক বাড়ি করে বিভিন্ন বাড়ির খাবার খাওয়া। এ এক অনন্য দৃষ্টান্ত। সদর উপজেলার এ গ্রামটির নাম ভাটিয়াপাড়া। এখানকার ২/৪ ঘর বাদে সবাই মুন্সী বংশের। তারা পূর্ব পুরুষ থেকে এক সঙ্গে ঈদের নামাজ শেষ করে বিভিন্ন বাড়িতে দল বেঁধে যান। খাবার খান এক সঙ্গে। সে জন্য বসার আলাদা কোনো ব্যবস্থা থাকে না। মাটিতে বসে কিংবা হাতে হাতে নিয়ে সেমাই, মিষ্টি, পোলাও, মাংস খাওয়া এ এক অন্য রকম ঈদ আনন্দ। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার বলেন, এটি একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। এ ঐতিহ্যকে ভাটিয়াপাড়া গ্রামবাসী ধরে রাখায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধরনের ব্যবস্থা যদি দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া যায় তা হলে মানুষে মানুষে বিভেদ কমে আসবে।

ওই গ্রামের মুন্সী তাইমুর ইসলাম, মুন্সী দাউদ আলি, মুন্সী আইয়ুব আলী জানান, গ্রামে রয়েছে তিন শতাধিক পরিবার। সুন্দর পরিপাটি এ গ্রামের বাড়িগুলো বেশ সাজানো গোছানো। তারা তাদের পূর্ব-পুরুষের যে রেওয়াজ সেটি ধরে রেখেছেন। ঈদের নামাজ শেষ করে আশপাশের কয়েকটি বাড়ির খাবার এক জায়গায় করা হয়। এভাবে গ্রামের কয়েকটি স্থানে খাবার জড়ো করে দলে দলে লোকজন গিয়ে সেসব খাবার খেয়ে আসছেন এবং এ জন্য কোনো প্লেট বা চেয়ার টেবিলেরও ব্যবস্থা থাকে না। কলার পাতায় এবং যার যার হাতে হাতে করে এসব খাবার খেয়ে নিচ্ছেন আনন্দের সঙ্গে। এতে একদিকে যেমন গ্রামের সবার মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ, একে অপরের প্রতি সহনশীল, থাকে সবার প্রতি মমত্ববোধ ও ভালোবাসা। কথা বলে জানা যায়, তারা বাপ-দাদার আমল থেকে এমন রেওয়াজ দেখে এসেছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর