রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঝুট কাপড়ের কম্বলে ভাগ্য বদল

আব্দুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

ঝুট কাপড়ের কম্বলে ভাগ্য বদল

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে গার্মেন্টের পরিত্যক্ত ঝুট কাপড় দিয়ে তৈরি হচ্ছে হরেক রকম কম্বল। মানে ভাল ও দামে কম হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এ কম্বলের চাহিদা। দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি ভারতেও যাচ্ছে এখানকার তৈরি কম্বল। বাড়িতে বসে কম্বল তৈরি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে এলাকার অসহায়-দরিদ্র প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন ও অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর  ভাঙনকবলিত শিমুলদাইড় গ্রামে ২৭ বছর আগে ঢাকার বিভিন্ন গার্মেন্টের ফেলে দেওয়া টুকরো কাপড় দিয়ে শুরু হয় কম্বল তৈরির কাজ। প্রথম দিকে দু-একজন এ ব্যবসায় জড়িত থাকলেও বর্তমানে ছোট-বড় শতাধিক ব্যবসায়ী কম্বল তৈরিতে জড়িত। ব্যবসায়ীরা ঢাকা থেকে ঝুট কাপড় এনে এলাকার দরিদ্র নারীদের হাতে তুলে দেন। তারা সেলাই মেশিনে ছোট ছোট টুকরোগুলো জোড়া দিয়ে বাহারী রংয়ের কম্বল তৈরি করেন। কাজিপুর উপজেলার শিমুলদাইড়, বরশীভাঙ্গা, মাধবডাঙ্গা, হরিনাথপুর, বেলতৈল, ছালভরা, কুনকুনিয়া, মাইজবাড়ী, ঢেকুরিয়া, পলাশবাড়ী, বিলচতলসহ আশপাশের অর্ধ-শতাধিত গ্রামে ঘরে ঘরে চলছে কম্বল সেলাইয়ের কাজ। প্রতিটি কম্বল মান ভেদে পাইকারী দরে ৯০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। নারী শ্রমিক আয়েশা ও সাবিনা জানান, প্রতি কম্বল সেলাইয়ে তারা ২৫-৩০ টাকা মজুরি পান। দিনে ৫ থেকে ১০টি কম্বল তারা সেলাই করতে পারেন।

সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে বাড়িতে বসে নারী-পুরুষ-স্কুলশিক্ষার্থী কম্বল তৈরি করে সংসার খরচের পাশাপাশি ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার আর্থিক জোগান দিচ্ছে। শিমুলদাইড় বাজারের ব্যবসায়ী সোহেল রানা জানান, এ বাজারে প্রায় ৫০টি কম্বলের দোকান রয়েছে। সব দোকান থেকে রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা পাইকারী দরে কম্বল কিনে নিয়ে যান। প্রতিদিন ৫০ লাখ টাকারও বেশি ক্রয় বিক্রয় হয়। কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, কাজিপুরের কম্বল এ অঞ্চলের হাজার হাজার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানে সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এ  শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

সর্বশেষ খবর