পাবনার চাটমোহর উপজেলা এক মাস ধরে বেড়েছে গরু চুরি। আতঙ্কে গ্রামবাসী রাত জেগে দলবদ্ধভাবে পাহারা দিচ্ছে। গত এক মাসে এই উপজেলায় ১৫টি গরু ও তিনটি মহিষ চুরি গেছে। প্রশাসন চুরি যাওয়া একটি গরু-মহিষও উদ্ধার কিংবা চোর শনাক্ত করতে না পারায় হতাশ ভুক্তভোগীসহ সাধারণ মানুষ।
সরেজমিন রাতে উপজেলার বালুদিয়ার গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একদল লোক লাঠি হাতে মুখে বাঁশি নিয়ে পাহারা দিচ্ছে। মাঘের তীব্র শীত উপেক্ষা করে গরু রক্ষায় তাদের এই রাত জাগা। উপস্থিত অনেকে জানান, তারা বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে গরু পালন করছেন। তাদের এই সম্পদ চুরি হয়ে গেলে পথে বসতে হবে। অনেকে বাণিজ্যিকভাবে গরুর খামার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। মূলত তারাই পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছেন।
গরু চুরি গত এক সপ্তাহে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি গরু চোর ধরতে গিয়ে উপজেলার রামনগর ঘাটে রব্বান আলি (৬০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। রব্বানকে চোরেরা তাদের কাভার্ড ভ্যানের নিচে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। সবশেষ গত শনিবার মূলগ্রাম ইউনিয়নের মহরমখালী গ্রামের জালাল উদ্দিনের তিনটি গরু নিয়ে গেছে চোরেরা। এর আগে মথুরাপুর ইউনিয়নের গোয়ালবাড়ি, ভাদ্রা ও ফৈলজানা ইউনিয়নের মেঘারপাড়া গ্রামে থেকে বেশকটি গবাদি পশু চুরির ঘটনা ঘটে।বালুদিয়ার গ্রামের পাহারাদাতা যুবক বাবুল আক্তার জানান, গত এক সপ্তাহে আমাদের গ্রামসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যেভাবে গরু চুরি হচ্ছে তাতে যাদের গরু আছে সবাই আতঙ্কিত। আমরা বাধ্য হয়ে গ্রামের সবাই মিলে রাতে পালা করে পাহারার ব্যবস্থা করেছি। প্রতি রাতে ৩২ জনের দল আটজন করে ভাগ হয়ে গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থান নিয়ে পাহারা দিচ্ছি। সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) এসএএম ফজল-ই-খুদা বলেন, সম্প্রতি চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের টহল আগের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে। চাটমোহর উপজেলা বড় এড়িয়া হওয়ায় এক সঙ্গে সব এলাকায় টহল দেওয়া সম্ভব হয়না। পুলিশের পাশাপাশি গ্রামবাসী এগিয়ে এলে চুরি প্রতিরোধ করা সহজ হবে। পুলিশ চোরদের ধরতে তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি।