ঋালো নেই কুষ্টিয়া ও ঠাকুরগাঁওয়ের আখচাষিরা। চিনিকলে আখ সরবরাহ করে টাকা পাচ্ছেন না এ দুই জেলার হাজার হাজার কৃষক। তাদের বকেয়া পড়েছে প্রায় ২৬ কোটি টাকা। এ অবস্থায় চাষিদের পরিবারে দেখা দিয়েছে অর্থ সংকট। দিন কাটছে হতশায়। কুষ্টিয়া চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সারওয়ার মোরশেদ বলেন, ‘মিলের কাছে চাষীদের পাওনা প্রায় ১৩ কোটি টাকা। চিনি বিক্রি ও সরকারি অর্থের জোগান না আসা পর্যন্ত পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব নয়।’ জানা যায়, চলতি মাড়াই মৌসুমে সাড়ে ১২ হাজার একর জমিতে ৯০ হাজার মেট্রিক টন আখ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কুষ্টিয়া সুগার মিল। বিগত দুই বছরের তুলনায় এ জেলায় কৃষকরা এবার বাড়তি জমিতে আখ আবাদ করেন, ফলনও ভাল হয়। তবে মিলে আখ সরবরাহ করে টাকা পাচ্ছেন না তারা। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আখচাষি আলম হোসেন বলেন, ‘তিনি এ মৌসুমে ১০ একর জমিতে আখ চাষ করেছিলেন। ইতিমধ্যে ৮ একরের আখ কেটে কুষ্টিয়া চিনিকলে বিক্রি করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কল কর্তৃপক্ষ একটি টাকাও পরিশোধ করেনি।’ চাষি বজলুর রহমান বলেন, ‘জমানো টাকা দিয়ে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করেছি। এখন টাকার অভাবে ছেলের স্কুলের বেতন দিতে পারছি না।’ আখ চাষি কল্যাণ ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মনিরুজ্জামান জানান, কৃষকরা এভাবে হয়রানির শিকার হলে আগামী মাড়াই মৌসুমে কুষ্টিয়া জোনে আখ চাষে বিপর্যয় নেমে আসবে।
এদিকে ঠাকুরগাঁও চিনিকলে পাঁচ হাজার আখচাষির পাওনা প্রায় ১৩ কোটি টাকা। পাওনা টাকা আদায়ের জন্য সম্প্রতি মিলগেটে বিক্ষোভ করেছে জেলার সাধারণ আখ চাষিরা। এ সময় ঠাকুরগাঁও রোড সড়ক অবরোধ করেন তারা। পরে পুলিশ কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একাধিক কৃষক জানান, তারা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। অথচ এখনো তাদের আখ বিক্রির টাকা পাচ্ছে না। ঠাকুরগাঁও সুগারমিলস পরিচালক আব্দুস শাহী জানান, চাষিদের বকেয়া খুব শিগগিরই পরিশোধ করা হবে।