মাদারীপুরে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগে কোটি টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত কমিটি ৭২ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে। যা জিডি মূলে রাখা হয়েছে মাদারীপুর সদর থানার ভল্টে। চাঞ্চল্যকর এ তথ্য জানাজানি হলে জেলার সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়। রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের নেতারা অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে জেলা থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জুন মাদারীপুর জেলা থেকে ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের জন্য শারীরিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেখান থেকে উত্তীর্ণরা ২৩ জুন সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজে লিখিত পরীক্ষা দেন। পর দিন বিকাল ৫টার মধ্যে ফল প্রকাশের কথা থাকলেও রাত ১০টার দিকে ফল জানান হয়। ২৪ জুন পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে অপরাধীদের ধরার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারের দেহরক্ষী নুরুজ্জামান সুমনকে ঘুষের টাকাসহ আটক করা হয়। এছাড়া পুলিশ সদস্য ও পুলিশ লাইন্সের মেস ম্যানেজার জাহিদ হোসেন, টিএসআই গোলাম রহমান এবং পুলিশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালার কাছে ঘুষের টাকা পাওয়া যায়। পরে নুরুজ্জামান সুমন ও জাহিদ হোসেনকে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে নজরদারিতে রাখা হয়। টিএসআই গোলাম রহমান এবং পুলিশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালাকে মাদারীপুর থেকে অন্যত্র শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। অভিযোগ আছে ঘটনাটি গত সোমবার রাতে হলেও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া চেষ্টা করে জেলা পুলিশ।
মাদারীপুর পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন, ‘ঘুষ কেলেঙ্কারির এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় যারা জড়িত সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিচার হওয়া উচিত। দোষীরা পার পেয়ে গেলে দুর্নীতি আরও বাড়বে। পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) সোহেল রানা জানান, ‘মাদারীপুরের একাধিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ হিসেবে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। নির্ভেজাল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য যা যা করা দরকার পুলিশ হেডকোয়ার্টার তা করেছে। যে জেলা থেকেই অভিযোগ পেয়েছি সেখানেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার তার দেহরক্ষীকে টাকাসহ আটকের বিষয় তিনি বলেন, ‘যার যার অপরাধের দায়ভার তারই।’